বামন কেউবা বাওন আবার কেউবা বলে ঊণমানুষ।
তাদের দেখি রাস্তার পাশে কিংবা সার্কাসের ভেতর ভাঁড় সেজে, সং মেখে আমাদেরকে আনন্দ দিতে।
কখনও বা সার্কাসের বাইরে ভাঁড়ামো দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে কিছু আয় করার চেষ্টা।
রাস্তার পাশে বা সার্কাসে মৃত্যু ঝুঁকি নিয়েও দু'পয়সা রোজগারে তারা আকুল।
কিন্তু এমন একজনকে দেখেছিলাম যিনি ভাঁড়ামোর পরে স্তেজ থেকে নেমেই মুখ কালো করে বসে ছিলেন। একটু কাছে গিয়ে জানতে পেরেছিলাম তার পরিবারের কথা, গরীব মায়ের কথা। অথচ খানিক আগেই মঞ্চে কি দারুণ অভিনয় করলেন তিনি।
কি অদ্ভুত! তাই না?
যাকে নিয়ে লিখছি তাকে আমিও সেই বামন বামন বলেই সম্বোধন করছি। অথচ একটা বার মানুষ বললাম না! তার ওই তিন ফিট শরীরটার ভেতরেও একটা প্রাণ আছে, আছে স্পন্দন, আছে আবেগ, অনুভূতি, ভালবাসা, স্নেহ, মমতা, প্রেম, রাগ, বিরাগ, যৌনতা।
আছে ক্ষুধা, আছে সব দুঃখ ভোলার আব্দার কিংবা সন্তান হয়ে মায়ের বুকে অসীম ভালবাসা পাওয়ার ইচ্ছা। তারাও মানুষ শুধুই মানুষ।
শুধুই মানুষ।।
‘বামন হয়ে চাঁদের দিকে হাত বাড়িও না’ আজ থেকে এই প্রবাদটা আর কখনও ব্যবহার করব না। এই প্রবাদটাই তো কেমন বৈষম্য তৈরি করে দিচ্ছে।
আসলে আমিই ভুল বললাম। এই প্রবাদ তাদের ছোট করেনি। আমাদের ছোট করেছে। এটি আমাদের নীচতার পরিচয় দেয়। আহা! কি মানুষ আমরা।
ভালো মন্দের তর্কে না গিয়ে তাদের শুধু মানুষ হিসেবে ভাবলে, সম্মান করলে কি জাত যাবে?