রত্নগর্ভা নয়, রত্ন হতে চাই

শিশু জন্ম নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হয়ে যায় তার লিঙ্গ।
রত্নগর্ভা নয়, রত্ন হতে চাই

ছেলে হলে পরিবার খুশি। ছেলে বংশ রক্ষা করবে। মেয়ে হলে পরিবারে চাপা কষ্ট।

এভাবেই জন্মের পর থেকে নারী-পুরুষ বৈষম্য শুরু হয়। এই বৈষম্য চলছেই। কোথাও কোথাও পরিবর্তন আসছে, তবে তা সামান্যই মনে হয়।

প্রত্যেক কবি-সাহিত্যিকগণ, নারী-পুরুষ সমতা নিয়ে লিখেছেন। তবে তারা নিজেও কিন্তু নারী-পুরুষ বৈষম্য করেছেন বলে আমি মনে করি। কোনো গল্পে পুরুষদের সম্বোধন করা হয় মানুষ বলে। উদাহরণস্বরূপ, দু'জন মানুষ আসছেন। এক্ষেত্রে দু'জনই পুরুষ হলে আলাদা করে উল্লেখ করা হয় না। কিন্তু তাদের মধ্যে একজন যদি নারী হন, তাহলে লেখা হয়, একজন পুরুষ আর একজন নারী আসছেন। এর অর্থ দাঁড়াল নারীরা মানুষ নয়, শুধুই নারী। 

মেয়েরা যেন ঘড়ির কাঁটার মতো একই চক্রে ঘুরছে। যুগে যুগে দু'একজন মহাপুরুষ বা মহিয়সী আসেন যাদের চেষ্টায় মেয়েরা কিছুটা এগিয়ে যায়।

ক'দিন আগে ধর্ম ক্লাসে স্যার একজন অনেক বড় আউলিয়ার মায়ের কথা বলছিলেন। বলছিলেন, উনার মায়ের মতো পর্দা করলে, ঘরের বাইরে না গেলে আমরাও তেমন সন্তানের জন্ম দিতে পারব।

আমার কথা হচ্ছে মেধাবী ও মহান সন্তানের জন্ম দিতে হবে কেন, আমরা নিজেরাই তো মেধাবী ও মহান হতে পারি। মেয়েদের কাজ কী শুধু সন্তান জন্ম দেওয়া, নিজে মহান হওয়া নয়?

আমি কোনো ধর্মবিরোধী কথা বলতে চাই না, তবে নারী না ভেবে মেয়েদের মানুষ ভাবলেই তাকে নারী-পুরুষ সমতা বলা যাবে।

বর্তমানে কিশোরীদের স্বপ্ন ভালো মা, রত্নগর্ভা হওয়া নয়, আমাদের স্বপ্ন আরো অনেক বড়। মেয়েরা চিকিৎসক হবে, প্রকৌশলী হবে, সাংবাদিক হবে, বিজ্ঞানী হবে।

আমরা নিজেরাই হতে চাই রত্ন, আমাদের মায়েদের করতে চাই রত্নগর্ভা। আমরা নারী হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে বাঁচতে চাই। নারী নয়, মানুষ হতে চাই।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com