এখন সেখানে আর সেই সব বইয়ের দোকান নাই!
কয়েকদিন আগে বই কিনতে গিয়েছিলাম। গিয়ে যা দেখলাম তাতে খুব কষ্ট হলো। দোকানগুলো সব গাইড বইয়ে ঠাসা। দোকানে নানা কোম্পানির বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার টেস্ট পেপারসহ আছে শুধু পাঠ সহায়ক বই।
সেখানে জায়গা পায়নি সিলেবাসের বাইরের কোনো সাহিত্য বা অনুবাদ অথবা আমাদের জন্যে মজার কোনো রূপকথার বই।
আগে অনেকে টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে বই কিনত। কারও বাবা-মা শখ করেই বই কিনে দিতেন আবার কেউ বাইরের বই পড়ার অপরাধে শাস্তিও দিতেন। কিন্তু বই পড়া বন্ধ হতো না।
এখন ইন্টারনেট, কম্পিউটার, মোবাইল ইত্যাদি এসেছে। বাচ্চাদের হাতে বইয়ের বদলে ট্যাব থাকে। চোখে জ্ঞান জিজ্ঞাসার বদলে ঠাঁই পায় হাই-পাওয়ারের চশমা থাকে।
এখন বাবা-মায়েরা জোর করে বাচ্চাদের দিয়ে গাইড বই পড়ান। বাচ্চারাও মাঝে মাঝে স্বেচ্ছায পড়ে, জিপিএ পাঁচ পাওয়ার ইঁদুর দৌড়ে সামিল হতে হবে তো!
এখন কেউ আর বইয়ের প্রচ্ছদ দেখে না, প্রথম পাতায় উপহারকারীর শুভেচ্ছা বাণীর কোনো দাম নেই। নতুন বইয়ের ঘ্রাণে চোখে জল আসে না। দেখে ছোখ চকচক করে ওঠে না।
বই পড়ার আনন্দ কী, এখনকার বেশির ভাগ ছেলেমেয়েরাই জানে না। বা জানে বলে আমি মনে করি না। আমার চেনা কয়েকজন বোকা আছে যারা বই পড়ে, বইয়ের মলাটের ছবি দেখে, প্রথম পাতায় উপহারকারীদের দিয়ে শুভেচ্ছাবাণী লেখায়, নতুন বইয়ের ঘ্রাণে চোখে পানি আনে।
এই ক’জনার মা-বাবা পড়ালেখার খবর না রেখে গল্পের বই কিনে দেন। জিপিএ পাঁচ পাওয়ার জন্য গাইড বইয়ের বোঝা মাথায় চাপিয়ে দেন না। একারণেই বড় বাঁচা বেঁচে গেছি!