পরীক্ষা শেষ। অবাধ অবসর। ফেইসবুকে বসতেও বাড়ির বারন নাই। কদিন আগেই চলে গেল বন্ধু দিবস। সেদিন শৈশব থেকে শুরু করে এখনকার অনেক দেশি বিদেশি বন্ধুর শুভেচ্ছা এসে পৌঁছেছে ফেইসবুকে।
স্মৃতিরা ভিড় জমালো। বন্ধুদের নিয়ে কাটানো সময়ের খুব মজার আর দুঃখের মুহূর্তগুলো।
কদিন আগে খুব সকালে বন্ধু রানার ফোন পেয়ে দৌড়ে বাসা থেকে বেরিয়ে খিলগাঁও ফ্লাইওভারে গিয়ে হাজির হলাম। দেখলাম দুর্ঘটনায় ওর মাথা, হাত ও পায়ে আঘাত পেয়েছে। সাইকেলটাও ভেঙে গেছে।
রানা জানিয়েছিল, সেতু পারাপারের সময় একটি দ্রুত গতিতে চলা মটর বাইক তাকে ধাক্কা দেয়। পাশেই পুলিশের গাড়ি। দুঃখের বিষয়, সেখান থেকে কোনো সাহায্য পায়নি ও। তারপর রানা আমাকে ফোন দিয়ে ডেকে নেয়।
রানাকে পার হয়ে চলে যাচ্ছে অনেক মানুষ, যানবাহন। কেউ ওর দিকে সহযোগিতার হাত বাড়ায়নি। ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি গাড়িকে থামানোর চেষ্টা করেও বিফল হলাম।
শেষে এক হাতে তার সাইকেল আর অন্য হাত দিয়ে রানাকে জড়িয়ে ধরে কোনোভাবে সেতু থেকে নেমে। লক্ষ্য, কাছের কোনো হাসপাতাল।
কিন্তু কাছের কোনো হাসপাতালই চিকিৎসা করাতে আগ্রহী নয় বরং সবাই বলছে, ঢাকা মেডিকেলে যেতে। কি কারণে চিকিৎসা করাতে চায় না জানতে চাইলে, তারা জানায়- দুর্ঘটনার শিকার হওয়া রোগীদের চিকিৎসা করে না।
আমার একার পক্ষে ওকে ওর সাইকেলসহ নিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না। শাহরিন শাহন ও মাহবুবুল হক নিশাতকে ফোন দিয়ে ডেকে নিলাম। রানার বাড়িতেও জানালাম।
হাসপাতালে পৌঁছানোর পরীক্ষানিরীক্ষা আর চিকিৎসার শুরু হতেই বাড়ির লোকেরা এসে গেলেন।
চিকিৎসক জানালেন, রানা শিগগির সুস্থ হয়ে উঠবে। শুনে আনন্দ আত্মহারা হয়ে পড়েছিলাম।
রানার বাড়ির লোকেরা আমাদের ধন্যবাদ জানালেন। এরপরে পণ করেছিলাম, বন্ধুর যে কোনো বিপদে এগিয়ে যাব। সহযোগিতা করব।
রানা ছাড়াও আমার অনেক বন্ধু আছে। যারা আমার সুখে দুঃখে প্রতিনিয়ত এগিয়ে আসে। রাশিক, মনন, জাওয়াদ, হৃদয়, ইভান, রিয়াদ, সাকির, পৃথাসহ অনেকেই। বিদেশি বন্ধুদের মধ্যে ভি, দিপ, হোপ, সোয়াই, আকিও, থাইরা তো আছেই।
সব বন্ধুর জন্যে ভালোবাসা।