সেদিন সন্ধ্যায় একটা কাজে উত্তরা থেকে সায়েদাবাদের উদ্দেশ্যে বের হলাম। একটি তথাকথিত ‘সিটিং সার্ভিস’ গাড়িতে চড়ে বসলাম।
গাড়িতে প্রায় ৫০জনের মতো যাত্রী। এয়ারপোর্ট পার হওয়ার পর রাস্তা একেবারে ফাঁকা ছিল। আমাদের গাড়ি ভালোভাবেই চলছিল। কিন্তু পেছন থেকে আরেকটি গাড়ি আসার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের চালক গাড়ির গতি এতটাই বাড়িয়ে দিলেন যে আমরা সবাই আতঙ্কিত হয়ে গেলাম।
বাসের সবাই চেঁচামেচি করছে। আমাদের চালককে দেখে ওই গাড়ির চালকও গতি বাড়িয়ে দিল। রীতিমত ‘রেইস’ শুরু হয়ে গেল রাস্তায়। আমার মনে হচ্ছিল বাতাসে উড়ছি। কি ভয়ানক অনুভূতি বলে বোঝান যাবে না।
মাঝে মাঝে দুটো বাস পাশাপাশি চলে আসছে। চালক দুজন গল্প করছে হাসাহাসি করছে। আবার গতি বাড়াচ্ছে। দুই বাস মিলিয়ে শত যাত্রী। অথচ সেদিকে তাদের কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। কি আশ্চর্য!
এভাবে খিলক্ষেত পর্যন্ত চলে প্রতিযোগিতা। এরপর গতি কিছুটা কমলেও যমুনা ফিউচার পার্ক পার হওয়ার পর আবার আরেকটি বাসের সঙ্গে প্রতিযোগিতা শুরু করে।
এরপর যাত্রীরা নিজেদের মধ্যে কথা বলা শুরু করে। শুনতে পেলাম এই বাসগুলো প্রায় এমনই করে। মানুষের জীবনের মূল্য তাদের কাছে নেই। প্রতিমাসে কত মানুষ যে তাদের সামান্য অবহেলায় মারা যায় তার হিসেব কে রাখে?
কদিন আগেই তারেক মাসুদ ও মিশুক মনিরের সেই দুর্ঘটনার বিচার হলো। কিন্তু আরও অহরহ দুর্ঘটনার বিচার হয় না। আড়ালে পড়ে থাকে শত মানুষের আর্তনাদ আর কান্না।