ঘটনাটি এ বছরের জানুয়ারির। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে এসেছিলেন দুটি মেয়ে। সেদিন ক্যাম্পাসে তারা উত্ত্যক্তের শিকার হন।
ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোজাহিদুল ইসলাম মেয়ে দুটিকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন বলে ছাত্রদের হাতে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে তাকে।
নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দেওয়ার পর তাকে শুনতে হয়েছে, “শিক্ষক হইছেন তো কি হইছে।”
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এক পর্যায়ে ছাত্ররা তাকে মারতেও উদ্যত হন।
২০১৫ সালে ঘটনা। সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর রীতিমতো চড়াও হয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারী শিক্ষকদের একজন ছিলেন সৈয়দ শামসুল ইসলাম। তিনি ছিলেন মুখপাত্র। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, সেদিন অন্তত সাত জন শিক্ষক আহত হন।
এর আগে ২০১৪ সালেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে শিক্ষক পেটানোর ঘটনা। পরীক্ষা দেওয়ার যোগ্যতা না থাকায় পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি এক শিক্ষার্থীকে। আর সে শিক্ষার্থী তার বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক গোলাম মইনুদ্দিনের ওপর চড়াও হন।
সম্প্রতি লাঞ্ছিত শিক্ষকদের তালিকায় সংযোজন হলো নারায়ণগঞ্জের শ্যামল কান্তি ভক্তের নাম।
তিনি পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ধর্ম নিয়ে 'কটূক্তি' করার অপবাদে স্থানীয় সাংসদের উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে কান ধরে উঠ-বস করানো হয় তাকে। সেটির একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে অনলাইনে। ভিডিওতে দেখা যায়, সাংসদের আঙুলের ইশারাতে উঠ-বস করছেন প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি। এক সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ে যান।
বলা হয়ে থাকে শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। আর এ মেরুদণ্ড শক্ত করেন যারা তারা যখন লাঞ্ছিত হন, তখন সেটা সত্যি দুঃখজনক।
শিক্ষকদের মর্যাদা নিয়ে পাঠ্যবইগুলোতে অনেক কথা লেখা থাকলেও বাস্তব জীবনের এ ঘটনাগুলো যেন জানিয়ে দিচ্ছে প্রাপ্য মর্যাদা পাচ্ছেন না শিক্ষকরা।