কিশোরগঞ্জ শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া নরসুন্দা নদী এক সময় ছিল প্রবাহমান খরস্রোতা। বর্ষায় এই নদী পথে যাতায়াত করতো বড় বড় পাল তোলা নৌকা। আসতো যাত্রীবাহী নৌযানও।
কিন্তু নদীটি দেখলে মনে হয় সেই রুপ এখন আর নেই। আমি জেনেছি ২০১২ সালে কিশোরগঞ্জবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে নদীটি খনন করা হয়। প্রশাসনের উদ্যোগে নদীর দুই পাড়ে বহুতল ভবনসহ বহু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদীর বেদখল হওয়া জায়গাও উদ্ধার করা হয়।
এই প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পরই নদীর প্রবাহ সামান্য ঠিক হলেও কিছুদিন পরই আবারো নদীর পাড়ে কোথাও কোথাও অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠে। পাশাপাশি শহরের প্রায় সমস্ত বর্জ্য নদীতে ফেলা হয় এই নদীতে। এছাড়াও বিভিন্ন হাসপাতালের, বাসা বাড়ির অপচনশীল প্লাস্টিক বর্জ্য নদীতে ফেলার কারণে পানি দূষিত হয়ে গেছে। ফলে নদীতে কোনো মাছ পাওয়া যায় না। অথচ একসময় যারা এই নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো তারা এখন তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেন না।
এই নদী ছিল কিশোরগঞ্জের ভাটি অঞ্চলের প্রবেশদ্বার। এই অঞ্চলের ব্যবসা বাণিজ্যের বড় অবলম্বন নাকি ছিল এই নদী। এখন এই দৃশ্য কেবল মধ্য বয়সীদের স্মৃতি। আর নতুন প্রজন্ম নদীর বর্তমান চেহারা দেখে এসব স্মৃতিকথা বিশ্বাসই করতে চায় না।
আমাদের সকলের চাওয়া, নরসুন্দা নদীটিকে আবারও তার প্রবাহ ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। এই নিয়ে প্রায়ই আমাদের শহরে আন্দোলন ও মানববন্ধন হয়। তবে কাজের কাজ হয় না কিছুই।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নদীর গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের নদী বাঁচাতে সবাইকেই সচেতন হতে হবে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৬। জেলা: কিশোরগঞ্জ।