বাল্যবিয়ে দেওয়া যে একটি অপরাধ, এটি এখন কারো অজানা নয়। তাই তো এখন বাল্যবিয়ে এমন ভাবে সংগঠিত করা হয়, যাতে করে পাড়াপড়শিরাও টের না পায়। অনেক গোপনীয়তা রক্ষা করে বাল্যবিয়ে দেওয়া হয়।
দাদা দাদি কিংবা নানা নানিদের মুখে শুনেছিলাম , আগেকার দিনে গ্রামাঞ্চলে ছয়-সাত বছরের মেয়ে শিশুর সঙ্গে ১০-১৫ বছরের ছেলে শিশুর বিয়ে হতো। দুই পক্ষের অভিভাবকদের ইচ্ছাতে বিয়ে হলেও বিয়ের পর বর ও কনের কেউই বৈবাহিক জীবন সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা রাখত না।
এখন ছয়-সাত বছর বয়সী মেয়ে শিশুর বিয়ের কথা না শোনা গেলেও গ্রাম অঞ্চলে মাঝেমধ্যে ১১-১২ বছরের মেয়ে শিশুর সঙ্গে বেশি বয়সের পুরুষের বিয়ের খবর শোনা যায়।
কোথাও কোথাও দরিদ্র পরিবারের ১১-১২ বছরের মেয়ে শিশুকে এলাকার প্রভাবশালী পরিবারের বয়োবৃদ্ধের কাছে বিয়ে দেওয়ার খবরও চোখে পড়ে। এ ধরণের বিয়ের ক্ষেত্রে অনেক গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়। আর এসব বিয়েতে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় কাজীরা সহায়তা করেন বলেও শোনা যায়।
এছাড়া মেয়ে বা ছেলের বয়স বাড়িয়ে বা নাম বদলে জন্মনিবন্ধন করার ব্যাপার তো আছেই।
কখনো কখনো বাল্যবিয়ে সম্পর্কে সমাজের সচেতন মানুষ জানার পর প্রতিবাদ করলে মেয়ের পরিবার থেকে আর্থিক অনটনের কথা বলা হয়। কখনো আবার সামাজিক নিরাপত্তার অভাবের কথাও বলা হয়ে থাকে।
আবার কোনো কোনো স্থানে বাল্যবিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে অভিভাবকদের বলতে শোনা যায়, ‘আমাদেরও অল্প বয়সে বিয়ে হয়েছে'। কই আমাদের তো কোনো ক্ষতি হয়নি। এখন ওদের হবে কেন?'
অভিভাবকদের এই ধরনের কথাই প্রমাণ করে বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে তারাই সচেতন নন। বাল্যবিয়ের কারণে তাদের জীবনে ক্ষতি ঠিকই হয়েছে, হয়তো তারা তা বুঝতে পারেননি। অতীত জীবনে তাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া কোনো ভুল পরবর্তী প্রজন্মের উপর চাপিয়ে দেওয়া কোনো ভাবেই উচিত নয়।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৫। জেলা: শেরপুর।