প্রতিটি শিশুর কথা বলার অধিকার আছে। তার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা দরকার।
Published : 12 Mar 2025, 08:05 PM
মাগুরায় পাশবিক নির্যাতনের শিকার শিশুটি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তার মা বলছেন, মেয়েকে বড় বোনের বাড়িতে পাঠিয়ে ভুল করেছেন। সমাজের মানুষ প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
এই ঘটনার পর আইন উপদেষ্টা বলেছেন, আইন বদলানো দরকার। কিন্তু আমরা কি শিশুটির কষ্ট বুঝতে পারছি? হয়ত পারছি না। আর তাই আমাদের বারবার এমন ভয়ানক ঘটনার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
আমার মনে প্রশ্ন জাগে, শিশুটি এই যাত্রায় বেঁচে গেলে আজীবন যে মানসিক কষ্ট সে বয়ে বেড়াবে তার দায় কে নেবে?
প্রতিটি শিশুর কথা বলার অধিকার আছে। তার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা দরকার। তার ওপর আস্থা রাখার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। মাগুরার এই শিশুটি আমাদের সেই শিক্ষা দিচ্ছে।
নারী নির্যাতনের ঘটনায় প্রায়ই প্রশ্ন ওঠে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তির পোশাক কেমন ছিল এবং সে কখন কোথায় গিয়েছিল। কিন্তু এই শিশুটির ক্ষেত্রে এসব প্রশ্নের কোনো মানে নেই। তাই বোঝা দরকার, নারী নির্যাতনের ঘটনায় এসব প্রশ্ন তোলা কতটা অযৌক্তিক।
জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের ২০২৪ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ নারী কোনো না কোনোভাবে নির্যাতনের শিকার হন। কিন্তু কয়টি ঘটনা প্রকাশ্যে আসে? আমার মনে হয়, খুবই কম।
কারণ নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ করলে লজ্জার ভার তাকেই নিতে হয় যে নির্যাতনের শিকার হয়। ফলে অনেক ভয়ানক ঘটনা গোপন থেকে যায়। আর অপরাধীরা থেকে যায় ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
এই ঘটনায় অপরাধীদের দ্রুত বিচার করা প্রয়োজন। বিচার দীর্ঘদিন ঝুলিয়ে রাখা যাবে না। তাহলে মানুষ মাঝে ভুল বার্তা যায়।
সুন্দর একটি সমাজের জন্য আমাদের মধ্যে গেঁথে থাকা পুরুষতন্ত্র ভাঙতে হবে। সরকারকে ব্যর্থতার দায় নিতে হবে। কথা বলার অধিকার বাধাহীন হতে হবে। তবেই হয়ত আর কাউকে এমন নিষ্ঠুরতার মুখোমুখি হতে হবে না।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৬। জেলা: ঢাকা।