যে শিশুটির হাতে বই-খাতা থাকার কথা সে করছে ভিক্ষাবৃত্তি!
বাংলাদেশের অন্যান্য জায়গার মতো গাইবান্ধা জেলা শহরেও এসব শিশু ভিক্ষুকদের দেখা যায়। চলার পথে জামা-কাপড়, হাত-পা ধরে তারা ভিক্ষা চায়। মলিন চেহারাগুলো দেখলে খুব মায়া হয়।
তারা এমনভাবে মানুষকে ধরে যে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। টাকা না দিলে কোনোভাবেই ছাড়তে চায় না। মানুষ অনেকটা বাধ্য হয়েই টাকা দিয়ে স্থান ত্যাগ করে।
আমার ধারণা এসব শিশুদের দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করানো হয়। তাদের পেছনে আছে বড়-ছোট নানা চক্র। নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় তারা বেছে নিয়েছে শিশুদের।
এই শিশুরাও হয়ত কোনো অসহায় পরিবারে জন্মায় আর এই অসহায়ত্বকে পুঁজি করে এসব স্বার্থান্বেষী মহল। আমি মনে করি এভাবে শিশুর ভবিষ্যতই নষ্ট হয়ে যায়। সে তার জীবন গড়ার সময়েই ভিক্ষাবৃত্তি শিখে নেয়, বাকি জীবনেও এটি তাকে প্রভাবিত করবে। সে কোনো কাজে যোগ দেয়ার চেয়ে ভিক্ষাকেই মনে করবে তুলনামূলক সহজ কাজ।
প্রতিটি শিশুরই তো নিরাপদ ও সুন্দর একটি ভবিষ্যত পাওয়ার অধিকার আছে। এতে রাষ্ট্রের যেমন দায়িত্ব রয়েছে তেমনি রয়েছে শিশুটির পরিবারেরও। সচেতন সমাজও এই দায় এড়াতে পারে না।
শিশু আইন ২০১৩ এর ৭১ ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি কোনো শিশুকে ভিক্ষার উদ্দেশ্যে নিয়োগ করেন বা কোন শিশুর দ্বারা ভিক্ষা করান অথবা শিশুর হেফাজত, তত্ত্বাবধান বা দেখাশোনার দায়িত্বে নিয়োজিত কোন ব্যক্তি যদি কোনো শিশুকে ভিক্ষার উদ্দেশ্যে নিয়োগদানে প্রশ্রয়দান করেন বা উৎসাহ প্রদান করেন বা ভিক্ষার উদ্দেশ্যে প্রদান করেন, তাহলে হলে তিনি এই আইনের অধীন অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে। এই অপরাধের জন্য তাকে অনধিক পাঁচ বছর কারাদণ্ড অথবা অনধিক এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।
যারা শিশুদের ভবিষ্যত নষ্ট করছে নিজেদের স্বার্থে এদের আইনের আওতায় আনা খুবই জরুরি। এরা দেশ ও জাতির শত্রু।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৬। জেলা: গাইবান্ধা।