কর্মক্ষেত্রেও নারীদের বিভিন্ন ধরনের সহিংসতার শিকার হতে হয়। নারীদের নিরাপদ কর্মপরিবেশের অভাব রয়েছে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতায়ও তারা পিছিয়ে রয়েছে।
Published : 18 Dec 2024, 09:09 PM
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নারীর অবদান অনস্বীকার্য। মুক্তিযুদ্ধের সময় নারীরা শুধু শরণার্থী শিবিরে সহায়তা বা চিকিৎসা সেবা প্রদান করেননি বরং তারা সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন।
নারীদের এই ত্যাগ ও সংগ্রামের গল্প আজও আমাদের প্রেরণার উৎস হলেও দুঃখজনকভাবে তাদের এই অবদানকে সঠিক মর্যাদা দেওয়া হয় না বলে আমার মনে হয়।
স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর নারীদের অবস্থানের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। শিক্ষার হার বৃদ্ধি, কর্মক্ষেত্রে প্রবেশাধিকার এবং নেতৃত্বে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখনও বৈষম্য ও চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।
গ্রামীণ এলাকায় মেয়েদের শিক্ষার ক্ষেত্রে এখনও প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের মেয়েরা অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা বা সামাজিক চাপের কারণে প্রাথমিক বা মাধ্যমিক শিক্ষার গণ্ডি পার হতে পারে না। অনেকেরই ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে বাল্যবিবাহের শিকার হতে হয়।
কর্মক্ষেত্রেও নারীদের বিভিন্ন ধরনের সহিংসতার শিকার হতে হয়। নারীদের নিরাপদ কর্মপরিবেশের অভাব রয়েছে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতায়ও তারা পিছিয়ে রয়েছে। এছাড়া পারিবারিক ও সামাজিক সহিংসতা এখনও নারীর উন্নতির অন্যতম প্রধান বাধা।
নারীদের প্রকৃত ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হলে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন। এজন্য নারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা এবং তাদের পছন্দের প্রতি সবার সম্মানবোধ থাকতে হবে এবং তার মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। এটি শুরু করতে হবে পরিবার থেকেই।
এরপর কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য ও সহিংসতা দূর করার জন্য আইন প্রণয়ন এবং তা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি নারীদের জন্য বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্যোক্তা কার্যক্রমে প্রবেশের পথ আরও সহজ করতে হবে।
নারীদেরকে শুধুমাত্র সহায়ক ভূমিকায় নয় বরং নেতৃত্বের জায়গায় দেখতে হবে। এজন্য পরিবার থেকেই মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন।
নারীর ক্ষমতায়ন শুধু তাদের অধিকার নয় বরং দেশের সার্বিক উন্নয়নেরও পূর্বশর্ত। নারীদের সঠিক মর্যাদা ও সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশ বিশ্বে একটি প্রকৃত সমতাভিত্তিক উন্নত রাষ্ট্রের রোল মডেল হিসেবে দাঁড়াতে পারবে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৭। জেলা: ঢাকা।