আগ্রাসী বন্যা কেড়ে নিল মামাকে

“যাদের পরিবারে শূন্যতা তৈরি হলো তারা হয়ত আজীবনই ফেলে যাবে চোখের জল।”
প্রতিনিধিত্বশীল ছবি
প্রতিনিধিত্বশীল ছবিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

বন্যায় নানাভাবে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কেউ হারিয়েছে শেষ সম্বলটুকু, কেউ হারিয়েছে প্রিয়জন। দুর্ভাগ্যক্রমে প্রিয়জন হারানোর তালিকায় পড়ে গেছি আমি নিজেও।

আমার ছোট মামা একটি নামি আইসক্রিম কোম্পানির ম্যানেজার হিসেবে সিলেটে কর্মরত ছিলেন। কাজের জন্যই সহকর্মীদের সঙ্গে মোটরসাইকেল নিয়ে বন্যার মধ্যে বের হন। এসময় সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় সুনামগঞ্জের সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

এসময় মামা তার পরিচয়পত্র এবং ফোন সহকর্মীদের কাছে দিয়ে মোটরসাইকেলটি নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে আসার জন্য তলিয়ে যাওয়া সড়কে নামে। তারপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পানির স্রোতে ভেসে মামা নিখোঁজ ছিলেন ছয় দিন। পরিবারের সবার মাথায় তখন নানা রকমের দুঃশ্চিন্তা ভর করে। এরপর বড় মামা খুঁজতে বের হন। পাগলের মতো খুঁজছিলেন বড় মামা, কিন্তু কোথাও পাওয়া যায়নি ছোট মামাকে।

নিখোঁজের ষষ্ঠ দিন সকালবেলা জেলেদের দেওয়া তথ্যে সুরমা নদী থেকে বড় মামা ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা মিলে ছোট মামার মরদেহ উদ্ধার করে।

দেরি না করে মামাকে দ্রুত আমাদের গ্রাম বরিশালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে যেতে পুরো একদিন সময় লেগেছে। সপ্তম দিন বিকেল বেলায় আমাদের গ্রামে মরদেহ পৌঁছায় এবং সেখানে দ্রুত দাফন করা হয়।

বন্যা কতটা আগ্রাসী হয়ে এসেছে তা হয়ত ভুক্তভোগী মানুষগুলোই জানে। যাদের পরিবারে শূন্যতা তৈরি হলো তারা হয়ত আজীবনই ফেলে যাবে চোখের জল। এই শূন্যতা যে পূরণ হবার নয়!

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com