“এখানে প্রায় সাত হাজার মানুষের বসবাস। এরমধ্যে শিশুর সংখ্যা এক হাজার ৮০০’র মতো।”
Published : 23 Dec 2024, 05:31 PM
রংপুর নগরীর রবার্টসনগঞ্জ এলাকায় ইস্পাহানি-৩ (বিহারি) ক্যাম্পে শিশুরা বেড়ে উঠছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। যেখানে দুর্গন্ধ, মশা-মাছি আর রোগ-বালাই নিত্যসঙ্গী বলে জানায় বাসিন্দারা।
ক্যাম্পে গিয়ে দেখা যায়, নয় থেকে ১০ ফুট খুপরি ঘরে সাত-আটজন মানুষ বাস করে। কারো কারো ঘরে মানুষের সঙ্গে গৃহপালিত পশুও থাকে। সরু গলি, নোংরা শৌচাগার আর মানুষের চাপে ঘিঞ্জি পরিবেশে যেন প্রাণে বাঁচা দায়।
ইস্পাহানি ক্যাম্পের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম মুন্না হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এখানে প্রায় সাত হাজার মানুষের বসবাস। এরমধ্যে শিশুর সংখ্যা এক হাজার ৮০০’র মতো।
এখানকার বাসিন্দাদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “চিকিৎসা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নাই এখানে। আমাদের আশে-পাশে কোনো হাসপাতালও নেই। নানা ধরনের জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা।”
নোংরা পরিবেশের কারণে শিশুদের রোগ-বালাই লেগেই থাকে জানিয়ে নাজনীন খাতুন নামের এক বাসিন্দা বলেন, “সবচাইতে বেশি হচ্ছে যে মশা, পোকা-মাকড় ইত্যাদি। বাচ্চারা অনেক রোগে আক্রান্ত হয়। ডায়রিয়া, বমি, পাতলা, পায়খানা অনেক ধরনের সমস্যা। এই পরিবেশে থাইকা নিরাপত্তা নাই।”
আয়েশা সিদ্দিকা নামের এক বাসিন্দা বলেন, “আমরা তো একটু হলেও কন্ট্রোল করতে পারব। কিন্তু ছোট বাচ্চারা তো পারবে না। পরিবেশটা চেঞ্জ হলে খুব ভালো হতো।”
মরিয়ম আক্তার নামে এক কিশোরী বলে, “আমাদের এখানে পরিবেশটা ভালো করতে হবে, নোংরা হচ্ছে। শিশুরা এজন্যই নোংরা হচ্ছে, রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এটাকে ভালো করতে হবে।”
এ নিয়ে রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান ইবনে তাজের সঙ্গে কথা বলে হ্যালো।
সিটি করপোরেশনের স্বাস্থকর্মীরা পরিচ্ছন্নতা নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা করে, কিন্তু সবার বাড়ি বাড়ি পৌঁছানো সম্ভব হয় না বলে জানান তিনি।
ক্যাম্পের শিশুদের দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে উল্লেখ করে এই চিকিৎসক বলেন, “নোংরা পরিবেশে প্রথমেই শিশুদের উপর মানসিক চাপ তৈরি হয়। তাছাড়া গুমোট পরিবেশে পশু-পাখির সাথে থাকছে, মলমূত্রের গন্ধ এখান থেকে আসলে বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ হতে পারে, কৃমি হতে পারে, ফুসফুসের সংক্রমণ হতে পারে। তাছাড়া শিশুদের ডায়রিয়া, আমাশয় হতে পারে।
তিনি যোগ করেন, “আমাদের কিছু কিছু রোগ আছে প্রাণী থেকেই মানুষের মধ্যে ছড়ায়। একই ঘরে একটা শিশু থাকতেছে, পশু-পাখিও থাকতেছে তাহলে কিন্তু ওর রোগটা শিশুর মধ্যে আসতে পারে।”
প্রতিবেদকের বয়স: ১৪। জেলা: রংপুর।