আমাদের পরিবার এবং সমাজ শিশু-কিশোরদের উপর এমনই চাপ সৃষ্টি করে যে, তারা জীবনের খেই হারিয়ে ফেলে।
Published : 02 Jan 2025, 05:03 PM
আমাদের দেশের কিশোর-কিশোরীদের কথা ভাবতে গেলে আমি সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন হই তাদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে। কারণ সমাজের মানুষের বিভিন্ন কার্যকলাপ আমাদেরকে ঠেলে দিচ্ছে মানসিক অসুস্থতার দিকে।
এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর আমার দুই বন্ধু মানসিকভাবে খুবই খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। বর্তমানে একজন সুস্থ হয়ে গেলেও আরেকজন খুবই খারাপ অবস্থায় আছে। আমি অনেক চেষ্টা করেও তাকে ফেরাতে পারিনি।
আমাদের পরিবার এবং সমাজ শিশু-কিশোরদের উপর এমনই চাপ সৃষ্টি করে যে, তারা জীবনের খেই হারিয়ে ফেলে। জীবনের শুরুতেই ছোট একটা ব্যর্থতাকেই তাদের সামনে অনেক বড় করে তুলে ধরেন প্রতিবেশির পাশাপাশি স্বজনরাও। এর ফলে কিশোর-কিশোরীদের মাঝে নিজের ক্ষতি করার প্রবণতা দেখা যায়। অনেক সময় তা গড়ায় আত্মহত্যা পর্যন্ত। এতে একটা ফুল কুড়িতেই ঝরে যেতে পারে।
আমার মনে হয় আমরা যদি কিশোর-কিশোরী এবং তাদের অভিভাবকদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে সচেতন করতে পারি তাহলে এমন সমস্যা অনেকাংশে কমে আসবে।
শিক্ষকরাও কম যান না। আমার দুই শিক্ষকের আচরণ তুলনা করে সেটা অনুমান করতে পারি। সেই শিক্ষকদের মধ্যে একজন আমাকে সবসময় অনুপ্রেরণা দেন। আমার ডায়েরিতেও ওই শিক্ষকের নাম লিখে রেখেছি।
এসব নানা ব্যাপার দেখেই আমার মাথায় আসে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করার কথা। নতুন বছরে আমি একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করব, যার নাম দিয়েছি 'মনপ্রভা'। কাজটি সম্পন্ন করার জন্য ইতোমধ্যে দল গঠন করেছি আমি।
নতুন এই বছরে কমপক্ষে ২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেমিনারের আয়োজন করব। আমাদের সঙ্গে থাকবেন একজন মনোবিদ। আমরা কাজ করব শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য।
আমাদের সমাজে শারীরিক সুস্থতাকে খুব গুরুত্ব দেয়া হয়, কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্য তেমন গুরুত্ব পায় না। আমি মানুষকে বোঝাতে চাই মানসিক স্বাস্থ্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমি ২০২৫-এ কাজ করব মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৬। জেলা: ঢাকা।