তুতেনখামেন এক ‘অভিশাপ’ 

(শেষ পর্ব) অভিযানের মধ্যেই একদিন গবেষক কার্টার ও তার দল দেখতে পান সেই হলুদ পাখিটির কিছু পালক পড়ে রয়েছে। পরে জানা যায় যে একটি সাপ পাখিটিকে মেরে ফেলেছে। এই ঘটনায় সকলের মনে অভিশাপের আশংকা ছায়া ফেলে। কারণ ফারাওদের রাজ্যে রক্ষক ছিল কোবরা ও শকুন।
তুতেনখামেন এক ‘অভিশাপ’ 

এরপর যখন গবেষণার অর্থ জোগানদাতা কার্নাবর্ন এসে প্রথম কফিনটি স্পর্শ করেন, কিছুদিন পরেই মশার কামড়ে তিনি মারা যান। জর্জ গুড নামে কার্নার্বনের একবন্ধু তার মৃত্যুর কথা জানতে পেরে মিশরে রওনা হন। কিন্তু দুর্ভাগ্য সমাধিটি দেখার পরের দিনই তিনি প্রচণ্ড জ্বরে মারা যান। 

জোয়েল উড নামে একজন শিল্পপতি সমাধিটি ভ্রমণ করে দেশে যাওয়ার পথে জ্বরেই মারা যান। ডাক্তাররা এর কোনো সঠিক ব্যাখ্যা খুঁজে পাননি।

আর্চিবাড রিড নামের একজন রেডিওলজিস্ট তৎকালীন সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে তুতেন খামেনের এক্স-রে রিপোর্ট করে তার বয়স এবং মৃত্যুর কারণ জানার চেষ্ট করেছিলেন। সেটা করতে গিয়ে এত ক্লান্ত হয়ে পড়েন যে তিনি ইংল্যান্ডে ফিরে যান। কিন্তু ইংল্যান্ডে পৌঁছানোর কিছুক্ষন পরেই রহস্যজনকভাবে তার মৃত্যু ঘটে।   

সমাধিটি আবিষ্কারের চার মাস পর কার্নার্বনের ব্যক্তিগত সচিব রিচার্ড বেথেলকে তার বিছানায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় এবং এ সংবাদ শোনার পর তার বাবা আত্মহত্যা করেন।

সমাধিটি উন্মোচনের সময় কয়েকজন লোক উপস্থিত ছিলেন তার মধ্যে ১২ জনই পরবর্তি ছয় বছরের মধ্যে অস্বাভাবিক কারণে মারা যান। এবং একই ভাবে দু’জন ছাড়া বাকী সবাইও পরবর্তি সাত বছরের মধ্যে মারা যান অস্বাভাবিকভাবে। 

লর্ড কার্নার্বনের সৎভাই পাগল হয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন। পরবর্তিতে ধীরে ধীরে তুতেনের সমাধি খননের কাজে বিভিন্নভাবে জড়িত প্রায় ২১ জন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেন।

খনি খননের কাজে নিয়োজিত গবেষক হাওয়ার্ড কার্টারই বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত বেঁচে থেকে স্বাভাবিকভাবে ১৯৩৯ সালে মারা যান।

তুতেন খামেনের দেহ সিটি স্ক্যান করানোর সময় ওই মেশিনটিও প্রায় আড়াই ঘণ্টা অকেজো হয়েছিল।  

এগুলো হয়তো অনেকগুলো কাকতালীয় ঘটনার যোগফল। আবার বৈজ্ঞানিকভাবেও ব্যাখা করা যায়।  হয়তো কফিনটির গায়ে বিষ লাগানো ছিল। এ কারণে আশে পাশের সবাই মারা গেছে। কিন্তু এক্ষেত্রে গবেষক কার্টারের ব্যাপারটির কোনো ব্যাখা মাথায় আসে না।  

এভাবেই রাজা তুতেন খামেন, ইতিহাসে এসব অভিশপ্ত ঘটনার জন্যই গোটা বিশ্বে একটি রহস্য হিসেবেই রয়ে গেছেন।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com