তুতেনখামেনের ঘটনার সাথে জুড়ে আছে জানা অজানা অসংখ্য কাহিনী। যেগুলোকে অভিশপ্ত মনে করা হয়।
হিস্ট্রি ডটকমের ওয়েবসাইট দেখে জানলাম, তুতেনখামেন ছিলেন ইজিপ্টের সর্বকনিষ্ঠ রাজা যিনি ১৩০৫ খ্রিষ্টাব্দে জন্ম নেন। তার বাবা আখেন আতেনও ইজিপ্টের শাসক ছিলেন।
বাবার মৃত্যুর পর নয় বছর বয়সে তুতেন সিংহাসনে বসেন। তবে আখেন আতেনের মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল, নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছিল সেটা নিয়ে মতভেদ রয়েছে।
আখেন আতেন ছিলেন সুর্যের এবং বাতাসের উপাসক, যেটি তিনি প্রজাদের উপরে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। একারণে তিনি তার বংশনাম পরিবর্তন করে আতেন বংশে নিজের নাম লেখান। ধারণা করা হয়, একারণেই তার পতন ঘটে।
প্রজাদের সমর্থন ফিরে পাওয়ার জন্য তুতেন তার বাবার বংশের নামে নাম তুতেন খাতেন থেকে হন তুতেন খামেন। ১৯বছর বয়সে তুতেনের মৃত্যু ঘটে।
তখন রাজাদের দেহ মৃত্যুর পরে মমি করে সেটিকে রাশিরাশি পাথর চাপা দিয়ে পিরামিডের ভেতর রাখা হত।
যদি পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন কোনো আশ্চর্যের কথা বলা হয়, সবার আগে পিরামিডের কথাই বলতে হয়। ইতিহাস বলে প্রায় পাঁচ হাজার ছয়শ’ বছরেরও বেশি সময় ধরে এটি টিকে আছে।
তুতেনখামেনকেও এই উপায়ে সমাধিস্থ করা হয়েছে। তবে তার পিরামিডটিই ২০শতক পর্যন্ত টিকে ছিল।
প্রত্নতত্ববিদ হাওয়ার্ড কাটার ১৮৯১ সালে প্রথম মিশরের মাটিতে পা রাখেন। মিশরে থাকার বছরগুলোতে তিনি তার গবেষণা এবং অনুসন্ধান থেকে এটা অনুভব করছিলেন যে কমপক্ষে একটি অনাবিষ্কৃত সমাধি এখনো মিশরে রয়েছে। আর তা হচ্ছে ফারাও রাজাদের মধ্যে একেবারেই অপরিচিত রাজা তুতেন খামেনের সমাধি। এবং তার ধারনা সত্যি হয়েছিল।
হাওয়ার্ড কার্টার সমাধিটি খুঁজে বের করতে লর্ড কার্নাবর্ন নামের একজন সম্পদশালী লোকের সাহায্য পেলেন। কার্নাবর্ন কার্টারকে তার সমস্ত অভিযানের খরচের যোগান দিলেন। পাঁচ বছর বৃথা সময় ও অর্থ নষ্ট করার ফলে কার্টারের ওপর থেকে কার্নাবর্নের মন উঠে যায় এবং তিনি অভিযানের অর্থ যোগান দেওয়া বন্ধ করার ঘোষণা দেন।
কার্টারের কাকুতি মিনতির পরে শেষ একটিবারের জন্য কার্নাবর্ন অর্থ যোগানে রাজি হন।
এইবার কার্টার পুরোদমে তার অভিযান শুরু করেন। এরই প্রেক্ষিতে তিনি আমেরিকা থেকে একটি হলুদ ক্যানারি পাখি নিয়ে আসেন। ক্যানারি শব্দের আরেকটি অর্থ হল গুপ্তচর। এই পাখিটিই শেষ পর্যন্ত কার্টারকে তুতেনখামেনের সমাধি পর্যন্ত নিয়ে যায়।
রাজা রামেসেস-চার এর সমাধিতে প্রায় দেড় লক্ষ টন পাথর অপসারণ করার পর নিচে পাথর কেটে তৈরি করা একটি সিঁড়ির সন্ধান পেলেন। খুঁড়তে খুঁড়তে তারা একই রকম আরও প্রায় ১৫টি সিঁড়ি ডিঙিয়ে শেষে একটি প্রাচীন এবং সিল করা দরজার সামনে এসে উপস্থিত হলেন। দরজার ওপর হায়ারোগ্লিফিক লিপিতে বড় করে লেখা ছিল, ‘তুতেন খামেন’।
দু’টি দরজা পার হওয়ার পরে তারা একটি কফিনের সন্ধান পেলেন। শেষতক পাওয়া গেল রাজা তুতেন খামেনের মমি। এরপরে এটিকে নিয়ে জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হয়।
এখন আসা যাক অভিশাপের কথায়। (চলবে)