হারিয়ে যেতে নেই মানা

আজকাল শহুরে এমনকি গ্রামীণ শিশুদের নিত্যসঙ্গী যেখানে টেলিভিশন, কম্পিউটার কিংবা স্মার্টফোন, সেখানে নিউ জিল্যান্ডের এক মা তার সন্তানদের এসব থেকে দূরে রেখেই বড় করে তুলছেন। বিষয়টি খুব সহজ নয়!
হারিয়ে যেতে নেই মানা

প্রকৃতির সাথে মিশে বেড়ে উঠছে তারা। সন্তানদের সেই বেড়ে উঠা ফ্রেমবন্দি করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন নিকি বুন নামের এই নারী।

নিকির চার সন্তান। নিউ জিল্যান্ডের মার্লবোরো নামের এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকেন নিকি। কার্ট, রেবেকা, অ্যান্টন ও আরওয়েন এ চার সন্তান তার।

তাদের হয়তো কম্পিউটারে সারাক্ষণ গেইমস খেলার সুযোগ নেই। কিন্তু তাদের সুযোগ রয়েছে যেখানে খুশি ছুটে বেড়াবার। সুযোগ রয়েছে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করার।

পেশায় নিকি একজন ফিজিওথেরাপিস্ট। পাশাপাশি একজন আলোকচিত্রীও। ছবি তোলার ঝোঁকটা শখের বশে। সন্তানদের শৈশব ফ্রেমবন্দি করে রাখার শখ থেকেই আলোকচিত্রী হয়ে উঠেন তিনি।

কার্ট, রেবেকা, অ্যান্টন আর আরওয়েনদের শৈশব একদমই ভিন্ন রকম। তারা কোনো নিয়ম-শৃঙ্খলায় বন্দি নেই। তাদের নেই কোনো স্কুলের তাড়া। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বদলে ঘরেই পড়ালেখা করছে চার ভাইবোন। সুযোগ পেলেই মাঠে ঘাটে ছুটে বেড়ানো, নানান ধরনের খেলায় মেতে উঠায় কোনো মানা নেই। খালি পায়ে খালি গায়ে চলে ছুটোছুটি। শহুরে কোনো ছোঁয়া নেই চার ভাইবোনের জীবনযাপনে। নেই প্রযুক্তির সাথে মেলামেশা। কিন্তু তাতে আক্ষেপও নেই।

কখনও চলে গাছে উঠা, কখনও কাদায় মাখামাখি। সমুদ্র তীরে কিংবা মাঠে তাদের দুরন্তপনা চলতেই থাকে। তাদের বাধা দেওয়ার কেউ নেই। থামানোর কেউ নেই। খামারের পশুপাখির যত্ন নিতেও ভালোবাসে তারা। তাদের এ দুরন্তপনাই ক্যামেরাবন্দি করে রাখেন মা নিকি।

নিকির ধারাবাহিক ছবি ‘চাইল্ডহুড ইন দ্য র’ এবং ‘ওয়াইল্ড এন্ড ফ্রি’-তে ফুটে উঠেছে সেগুলোই।

টুডে ডট কমকে নিকি বলেন, “আমাদের সন্তানদের জীবনে কখনো টিভি বা আইপ্যাড ছিল না। অন্ততপক্ষে এ ঘরে না।

“তারা মনে করে না এখানে তাদের কোনো কমতি রয়েছে। আমাদের জায়গা ও তার চার পাশের পরিবেশের সাথে মিশে বিনোদন পাওয়ার পথ তাদের জন্য খোলা রয়েছে।”

ক্রিয়েটিভ বুমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “অবাধ খেলাধুলা ও প্রকৃতিতে ঘেরা পরিবেশে তাদের দিনগুলোর স্মৃতি রেখে দিই। তাদের শৈশবের জীবন্ত স্মৃতি রেখে দেওয়ার জন্য ছবি তুলি।”

২০১৫ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের উইনার ডেইলি ডোজেন হন তিনি। ২০১৬ সালে জিতে নেন ইন্টারন্যাশনাল ফটোগ্রাফার অফ দ্য ইয়ার। ২০১৬ সালে ‘পিপল ক্যাটাগরি’-তে ইন্টারন্যাশনাল ফটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ড পান। এছাড়া তার ছবি ২০১৫ সালের বিএন্ডডব্লিউ চাইল্ড ফটো কম্পিটিশনে লাইফস্টাইল বিভাগে প্রথম হয়। 

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com