১৯৪১ সালে লন্ডনে আন্তর্জাতিক ছাত্র সংস্থা ও পরবর্তীকালে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ১৭ নভেম্বরকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এমনকি বর্তমান চেক প্রজাতন্ত্র (তৎকালিন চেকোশ্লাভাকিয়া) ও গ্রিসে দিনটি জাতীয় ছুটির দিন হিসাবেও পালিত হয়। পরে ২০০০ সালে জাতিসংঘ দিবসটির স্বীকৃতি দেয়। তারপরে ২০১০ সালে, জাতিসংঘ ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও পরমাণু বিজ্ঞানী এপিজে আব্দুল কালামের সম্মানে ১৫ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। কারণ আব্দুল কালাম নিজেকে শিক্ষক ভাবতেই বেশি পছন্দ করতেন।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী দিবস মূলত বহু সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্যের শিক্ষার্থীদের একটি উৎসব। বিশ্বব্যাপী ছাত্রদের কর্মতৎপরতার রূপক হিসাবে এ দিনটি পালিত হয়, যদিও আক্ষরিকভাবে এ দিনটি পালিত হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয়া প্রাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২শ’ শিক্ষার্থীর স্মরণে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৩৯ সালের শেষের দিকে নাজিরা চেকোশ্লাভাকিয়ায় আগ্রাসন চালিয়ে পুরো দেশ দখল করে নেয়। এরপর স্বাধীন চেকোশ্লাভাকিয়া প্রজাতন্ত্রের দাবিতে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হয়। এতে দেশের সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের একত্র করা হয়। এদের একজন নেতা বাড়ি ফেরার পথে জার্মান সেনাদের হাতে নিহত হলে তাদের আন্দোলন বেগবান হয়। তাদের দমাতে বন্ধ করে দেওয়া হয় সমস্ত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১২শ’ শিক্ষার্থীকে গ্রেপতার করে সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হয় এবং বিনা বিচারে ন’জন ছাত্র ও শিক্ষককে ফাঁসি দেওয়া হয়। এই ধরনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ছাত্রদের প্রতিবাদী চেতনার স্বীকৃতি হিসেবেই পালিত হয় দিনটি।
এ দিনটিতে শিক্ষার্থীরা সমাজের প্রতি তাদের কর্তব্য ও দায়িত্বকে তুলে ধরে। নানা ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এছাড়াও আলোচনা সভাসহ নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।