নিল আর্মস্ট্রং

মানব সভ্যতার ইতিহাসে মানুষের চাঁদে পা রাখার ঘটনা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আর প্রথম মানুষ হিসেবে চাঁদে পা রাখায় নিল আর্মস্ট্রং চির স্মরণীয় হয়ে আছেন।

২৫ অগাস্ট তার মৃত্যুবার্ষিকি। ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সিনসিনাটিতে এই কিংবদন্তী মারা যান।

তিনি ১৯৩০ সালের ৫ অগাস্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপাকোনেটায় জন্ম গ্রহণ করেন। স্টিফেন কনিগ আর্মস্টং  ও ভায়োলা লুইসা দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে সবচেয়ে বড় ছিলেন তিনি।

বাবার সরকারি চাকরির সুবাদে শৈশবে তিনি দেশের নানা অঞ্চলে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ পান। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে তিনি প্রথম প্লেনে ভ্রমণ করেন। এই অভিজ্ঞতা তার মনে গভীর প্রভাব ফেলে। তখন থেকেই তিনি বৈমানিক হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ব্লুম হাইস্কুলে তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু হয়। ছাত্র জীবনে তিনি স্কাউটের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং দ্রুতই ঈগল স্কাউট র‍্যাংক অর্জন করেন। ১৯৪৭ সালে তিনি পার্ডু বিশ্ববিদ্যালয়ে এরোনটিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভর্তি হন।

১৯৪৯ সালে আর্মস্ট্রং পেনসাকোলা বিমানঘাঁটিতে চাকরির সুযোগ পান। ১৮ মাস প্রশিক্ষণের পর তিনি ১৯৫০ সালের অগাস্টে বৈমানিক হিসেবে স্বীকৃতি পান।

১৯৫১ সালের আগস্ট মাসে তিনি কোরিয়ান যুদ্ধে অংশ নেন। পরবর্তী তিন বছরে তিনি কোরিয়ার যুদ্ধে ৭৮টি মিশনে অংশ নেন। ১৯৫২ সালে আর্মস্ট্রং যুক্তরাষ্ট্র বিমানবাহিনীতে জুনিয়র গ্রেডের লেফটেন্যান্ট হিসেবে যোগ দেন। সেখানে আট বছর কাজের পর ১৯৬০ সালে তিনি এ কাজ ছেড়ে দেন।

১৯৫৫ সালে তিনি পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে ১৯৭০ সালে ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন ক্যলিফোর্নিয়া থেকে এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

আর্মস্ট্রং প্রথম ১৯৬৬ সালের ১৬ মার্চ জেমিনি ৭ নভোযানের চালক হিসেবে মহাকাশ অভিযানে যান। ৭৫ ঘন্টা উড়ার পরিকল্পনা থাকলেও মহাকাশযানটির যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ১১ ঘন্টা পরই ফিরে আসেন তিনি।

এরপর ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই ২০:১৭:৪০ সময়ে (যুক্তরাষ্ট্রের সময় অনুযায়ী) অ্যাডউইন অলড্রিনকে সঙ্গে নিয়ে নিল আর্মস্ট্রং চাঁদে অবতরণ করেন। সেখানে তারা প্রায় আড়াই ঘন্টা সময় কাটান।

চাঁদে পা রেখে প্রথমেই তিনি বলেন,  “এটি একজন মানুষের জন্য ক্ষুদ্র একটি পদক্ষেপ। কিন্তু মানবজাতির জন্য এক বিশাল অগ্রযাত্রা।"

নিল আর্মস্ট্রং যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক ‘কনগ্রেশনাল গোল্ড মেডেল’, ‘প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম’ সহ নানা পদক পেয়েছেন।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com