এই কিউই পর্বতারোহী ১৯১৯ সালের ২০ জুলাই নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডের শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ছিল পার্সিভাল অগস্টাস হিলারি ও মার নাম ছিল গার্ট্রুড ক্লার্ক।
ছয় ফুট পাঁচ ইঞ্চি উচ্চতার হিলারি টুয়াকাউ প্রাথমিক বিদ্যালয় ও অকল্যান্ড গ্রামার স্কুলে পড়ালেখা করেন।
ষোল বছর বয়সে বিদ্যালয় থেকে মাউন্ট রুয়াপেহু পর্বতে ভ্রমণের সময় তিনি পর্বতারোহণের প্রতি উৎসাহিত হন। তখন থেকেই কিশোর হিলারির স্বপ্ন ছিল তুষারশুভ্র চূড়ায় উঠে আকাশের কাছাকাছি বসে নিচের পৃথিবীকে দেখা। এভাবেই বড় হয়ে পর্বতারোহী হওয়ার স্বপ্নের বীজ বুনে ফেলেন হৃদয়ে।
কলেজ শেষে ইউনিভার্সিটি অব অকল্যান্ড থেকে গণিতে স্নাতক ডিগ্রি নেন। এর পরপরই জীবনের প্রথম ‘মাউন্ট অলিভার’ নামক চূড়ায় উঠেন।
কিন্তু জীবিকার তাগিদে স্বপ্ন বুকে পুষেই ভাইয়ের সঙ্গে মধুর ব্যবসায় যোগ দেন তিনি। দুর্গম পার্বত্য বনভূমিতে মৌয়ালের কাজ করাটা তার নেশা হয়ে উঠে। গ্রীষ্মকালে মৌয়ালের কাজ করে যে টাকা জমাতেন সেটা নিয়ে চলে যেতেন পর্বতের দিকে। এর মধ্যে শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। তিনি যুদ্ধে যোগ দেন রয়েল নিউজিল্যান্ড এয়ারফোর্সের উভচর সি-প্লেনের নেভিগেটর হিসাবে।
১৯৫২ সালে প্রায় একই সময়ে হিলারি এবং তার বন্ধু জর্জ লো আল্পস অভিযানের সময় জয়েন্ট হিমালয়ান কমিটির এভারেস্ট অভিযানের আমন্ত্রণ পান।
প্রথমে দলের নেতৃত্বে ব্রিটিশ এক্সপ্লোরার শিপটন থাকলেও পরে দায়িত্ব পান উইলিয়াম হান্ট। এতে এভারেস্ট অভিযানের দল থেকে হিলারি নাম প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু এরপর হান্ট এবং শিপটন দুই জন মিলিত হয়ে হিলারিকে রাজি করান। মূল অভিযাত্রীদের ছোট ছোট উপদলে ভাগ করা হয়। হিলারির দলের অন্যজন সদস্যের নাম তেনজিং নোরগে। সাধনা আর শ্রমকে সঙ্গী করে ১৯৫৩ সালের ২৮ মে তারা এভারেস্টের কাছাকাছি চলে যান।
সহায়তাকারী দল বিদায় নিলে সামনে এগিয়ে যান দুই বন্ধু তেনজিং আর হিলারি। অবশেষে ২৯ মে তারা এভারেস্টে উঠতে সক্ষম হন।
২০০৮ সালের ১১ জানুয়ারি অকল্যান্ডে ৮৮ বছর বয়সে তিনি মারা যান।