লাল সবুজ পতাকা এক জ্বলজ্বলে দলিল

"কথা ছিল একটি পতাকা পেলে, আমি আর লিখব না বেদনার অঙ্কুরিত কষ্টের কবিতা"

কবিতার লাইন দুটি পড়েই মনে হয়েছিল মুক্তির পতাকার প্রতি কবির কতটা আকুতি। পৃথিবীর অন্য জাতির ইতিহাসে এমন আনন্দ, এমন পতাকা প্রাপ্তির দিন আছে কিনা জানি না কিন্তু আমাদের আছে।

আমাদের জাতীয় জীবনে তেমন একটি অমলিন দিন হল ১৬ ডিসেম্বর, আমাদের বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনটিতেই পাকিস্তানি বাহিনী বিনা শর্তে আত্মসমর্পণ করে বাঙালির কাছে। আমরা বিজয় পাই ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে। ইতিহাসে এমন ঘটনা বিরল। আর এই বিজয়ের সাক্ষী যেন আমাদের লাল-সবুজ পতাকা।

২ মার্চ, ১৯৭১ সালে সর্বপ্রথম বাংলার মাটিতে উড়ে বাংলার পতাকা। এই পতাকারই জন্য নির্ভয়ে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলেন অসংখ্য বীর যোদ্ধা, প্রাণ হারিয়েছিলেন ৩০ লক্ষ মানুষ।

বিজয়ের ৪৪ বছর পরেও বাঙালির হৃদয় থেকে এই পতাকার মর্যাদা একটুও হারায়নি। আমাদের দেশে প্রতি বছর বিজয় দিবস পালিত হচ্ছে মহা সমারোহে। দলে দলে মানুষ যায় স্মৃতিসৌধে, ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় শহীদদের।

বিজয় মাসের প্রথম দিন থেকেই শহর সাজে লাল সবুজে। চারদিকে বিজয় উৎসবের আমেজ। বিজয় উদযাপন করতে স্কুল, কলেজগুলোতে চলে নানা প্রস্তুতি। খবরের কাগজ, টেলিভিশন চ্যানেলগুলো মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিশেষ সংখ্যা ও বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার শুরু করে।

দেশটা পেয়েছি অনেক রক্ত, অনেক সম্ভ্রম ও অনেক বিয়োগের মধ্য দিয়ে। পাকিস্তানি বর্বররা টানা নয় মাস আমাদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালিয়েছে। শান্তিকামী বাঙালি পতাকার নেশায় করেছে পাল্টা আঘাত, এসেছে বিজয়।

বাংলার দামাল ছেলেরা অসীম বীরত্ব ও সাহস দিয়ে ছিনিয়ে এনেছে লাল সবুজের পতাকা। তাই পতাকা শুধু এক টুকরো কাপড় নয়, এটা অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করার এক জ্বলজ্বলে দলিল।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com