বিজ্ঞানের জগতে তার অসামান্য অবদান রয়েছে। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে তিনি বিজ্ঞানকে সমৃদ্ধ করতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন।
তার বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারগুলোর মধ্যে দুটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। একটি হল মাইক্রোওয়েভ নিয়ে তার গবেষণা। তিনি মাইক্রোওয়েভ সফলভাবে প্রেরণ করে এবং তা পরে অন্য যন্ত্র দিয়ে গ্রহণ করে দেখান।
তবে রেডিও আবিষ্কারের কৃতিত্ব কিন্তু তার নয়। রেডিওতে ব্যবহার করা হয় শর্টওয়েভ। আর তিনি কাজ করেছিলেন মাইক্রোওয়েভ নিয়ে। এই মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করা হয় মূলত টেলিভিশন ও রাডারে।
তিনি বেশি খ্যাতি পান উদ্ভিদের প্রাণ বিষয়ে গবেষণার জন্য। তিনি গবেষণা করে দেখান যে, আঘাত করলে প্রাণিদের মতো উদ্ভিদও সাড়া দেয়, তারাও প্রতিক্রিয়া দেখায়। এই গবেষণা করতে গিয়ে উদ্ভিদের বৃদ্ধি মাপতে ক্রেস্কোগ্রাফ ও উত্তেজনা মাপতে রিজোনাস্ট রেকর্ডার আবিষ্কার করেন।
তিনি ১৮৭৪ সালে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল থেকে প্রবেশিকা এবং ১৮৭৮ সালে এফ এ পাশ করে বিলেতে যান ডাক্তারি পড়তে। তবে অসুস্থতার জন্য তিনি পড়া ছেড়ে দেশে ফিরে আসেন।
সে সময়ের ভারতের গভর্নর জেনারেল জর্জ রবিনসন ও কয়েকজনের অনুরোধে অ্যালফ্রেড ক্রফট বসুকে প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক নিযুক্ত করেন। কলেজের অধ্যক্ষ চার্লস হেনরি টনি এই নিয়োগের বিরোধিতা করেন বলে শোনা যায়।
শুধু তাই নয় গবেষণার জন্য কোনো রকম সুবিধা পেতেন না তিনি। এছাড়া বেতন বৈষম্য তো ছিলই। তিনি বিদেশি অধ্যাপকদের অর্ধেক বেতনেরও কম বেতন পেতেন। এর প্রতিবাদে তিনি বেতন নেওয়া বন্ধ করে দেন এবং তিন বছর অবৈতনিকভাবেই অধ্যাপনা চালিয়ে যান। দীর্ঘকাল ধরে এই প্রতিবাদের ফলে তার বেতন অন্য অধ্যাপকদের সমান করা হয়।
প্রেসিডেন্সি কলেজে গবেষণার কোনো রকম ব্যবস্থা না থাকায় ২৪ বর্গফুটের একটি ছোট ঘরে তাকে গবেষণার কাজ চালিয়ে যেতে হতো। পদে পদে প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তার বিজ্ঞান সাধনা চলতে থাকে।
তার সম্পর্কে বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন বলেছিলেন, “জগদীশচন্দ্র যেসব অমূল্য তথ্য পৃথিবীকে উপহার দিয়েছেন, তার যে কোনোটির জন্যই স্মারকস্তম্ভ স্থাপন করা উচিত।”
বাংলায় প্রথম বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি লিখেছিলেন জগদীশচন্দ্র বসু। ১৮৯৬ সালে ‘নিরুদ্দেশের কাহিনি’ নামে গল্পটি লেখেন তিনি।