অনুপ্রেরণায় মাশরাফি

তার পরিচয় দেওয়ার জন্য কোনো বিশেষণ বা উপমার প্রয়োজন নেই। তিনি নিজেই যেন এক বিশেষণ। তিনি মাশরাফি। বাংলাদেশ জাতীয় দলের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

শুধু অধিনায়ক নন, একজন যোদ্ধা, একজন নেতা। সবার অনুপ্রেরণা। অনুপ্রেরণা কেনই হবেন না? ক্রিকেট ক্যারিয়ারে বারেবারে সম্মুখীন হয়েছেন চোটের। চোট যেন তার পথচলার নিত্য সঙ্গী।

আর এ চোটের কারণে হাঁটুতে অস্ত্রোপাচার হয়েছে সাতটি। কিন্তু মাঠে রান বাঁচাতে যেভাবে লাফ দেন নিজেকে তা দেখে অস্ত্রোপাচারের এ সংখ্যা ঠাহর করা যায় না। মাঠে যেন সব ভুলে যান তিনি। দলের হয়ে খেলেন নিজেকে উজাড় করে।

ইতোমধ্যে দলের হয়ে খেলেছেন ১৫৭ ওয়ানডে ৩৬ টেস্ট ও ৩১টি টি-টোয়েন্টি। ক্রিকেটাঙ্গনে মাশরাফির শুরু ২০০১ সালে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা ছাড়াই মাঠে নামেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। অভিষেক টেস্টে নেন চার উইকেট। ওয়ানডে অভিষেকেও আলো ছড়ান তিনি। গতির ঝড় তুলে পান 'নড়াইল এক্সপ্রেস' খ্যাতি।

ক্যারিয়ারের শুরুতে চোট বাসা বাঁধে। ক্যারিয়ারের চার বছরের মধ্যে ছয়বার চোটের কারণে সিরিজের মাঝপথ থেকে ছিটকে যান তিনি। কিন্তু চোট তাকে আটকে রাখতে পারেনি। চোটে পড়া, আবার চোট কাটিয়ে ফেরা, আবার আলো ছড়ানো, এগুলো তার ক্যারিয়ারের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

লিগামেন্ট ছিড়ে যাওয়ায় দেশের মাটিতে ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ছিলেন দর্শক। ২০০৯ সালের পর আর নামা হয়নি টেস্ট খেলতে। ২০১১ বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন দর্শক, আর ২০১৫ সালে হলেন দলের অধিনায়ক। আর বিশ্বকাপে দল সফলতার দেখাও পেল।

ইংল্যান্ডের কফিনে রুবেল যখন শেষ পেরেক ঠুকলেন, তখন মাঠে শুয়ে পড়েন আবেগী মাশরাফি। সঙ্গে সঙ্গে তার উপড়ে এসে পড়ে সবাই। এত অস্ত্রোপাচার আর এত ঝুঁকি নিয়ে খেলে যাচ্ছেন মাশরাফি। ভক্তরা তার পাগলামি দেখে ডাকে 'পাগলা'। সবার কাছে তিনি নায়ক।

কিন্তু তার কাছে তিনি নায়ক নন, তার কাছে নায়ক একাত্তরের যোদ্ধারা। একটি সাক্ষাৎকারে এমনটিই জানিয়েছেন এই কিংবদন্তি।

১৯৮৩ সালের ৫ অক্টোবর নড়াইলে জন্মগ্রহণ করেন মাশরাফি। আজ তার ৩২তম জন্মদিন। বয়স বাড়তেই থাকবে। হয়তো একদিন বাধ্য হয়েই যাবেন অবসরে। কিন্তু অজস্র ভক্ত তাকে ভুলতে পারবে না। ভুলতে পারবে না দেশের প্রতি তার ভালোবাসা।

জন্মদিনে এই বাঘের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা ও শুভ কামনা।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com