যার লেখনীতে বিদ্রোহ

কাজী নজরুল ইসলাম। শিহরণ জাগানো শত বিদ্রোহের জন্মদাতা এ কবির ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী বৃহস্পতিবার।

জীবনের ক্ষণে ক্ষণে লড়াই চালানো এ কবির লেখাতে শুধু মুগ্ধতাই থাকেনা, থাকে বিদ্রোহের প্রেরণাও।
 

শৈশব থেকেই সংগ্রামী জীবন নজরুলের। ১৮৮৯ সালে বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্ম নেন। ছোটবেলাতেই বাবাকে হারানোর ফলে বেশ কষ্ট করতে হয় তাকে। বাবার মৃত্যুর পর অভাবের কারণে থেমে যায় তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাজীবন।
 

দশ বছর বয়সে যখন অন্য শিশুরা মাঠে খেলাধুলায় ব্যস্ত সেই বয়সে নজরুল নামেন অর্থ উপার্জনে। একটি মসজিদের আযানদাতা (মুয়াজ্জিন) হিসেবে কিছুদিন কাজ করলেও তারপর নজরুল যোগ দেন লেটো গানের দলে। এক সময় রুটির দোকানে কাজও করতে হয়েছে তাকে। 

১৯১০ সালে রাণিগঞ্জ সিয়ারসোল স্কুলে ভর্তি হবার সুযোগ পেয়ে নজরুল ফেরেন ছাত্রজীবনে। তবে তাও চলেনি বেশিদিন। ১৯১৭ সালে নজরুল ইসলাম সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন।

শুধু সাহিত্যচর্চাই নয়, সাংবাদিকতাও করেছেন নজরুল। ‘নবযুগ’ নামক একটি সান্ধ্য পত্রিকায় কাজ করতেন তিনি। 

লেখালেখির ক্ষেত্রেও নজরুলের কলম ছিল প্রতিবাদী। ইংরেজদের অত্যাচার আর শোষণের বিরুদ্ধে তিনি প্রায়ই কবিতা লিখতেন। তার কবিতাতেই শেখানো মাথা উঁচু করে বাঁচার কথা। বিদ্রোহী কবিতাতেও  তিনি লিখেছেন, “বল বীর- বল উন্নত মম শির! শির নেহারী আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রীর!”

তার লেখায় পৃথিবীর সৃষ্টি নিয়েও আগ্রহ ফুটে উঠেছে। সংকল্প কবিতায় কবি লেখেন, “থাকবো না’ক বদ্ধ ঘরে, দেখবো এবার জগৎটাকে,- কেমন করে ঘুরছে মানুষ যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে”।

সমাজের অবহেলিত মানুষের হয়েও কথা বলেছেন বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তার অনন্য সৃষ্টি কুলি-মজুর কবিতাতে তিনি লিখেন “দেখিনু সে দিন রেলে, কুলি বলে এক বাবু সাব তারে ঠেলে দিল নিচে ফেলে- চোখ ফেটে এলো জল, এমনি করে কি জগৎ জুড়িয়া মার খাবে দুর্বল?”

প্রেম আর দ্রোহের এই কবি যুগ যুগ বেঁচে থাকবে বিদ্রোহ আর মানুষের ভালোবাসায়।

 

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com