সিলেটের ঘাসিটুলা এলাকাটি মূলত বেত শিল্পের জন্য বিখ্যাত। শোনা যায়, বেত শিল্পকে বাঁচাতে আগে এ গাঁয়ের ছেলেমেয়েদের অন্য গ্রামে বিয়ে দেওয়া হতো না।
বেত শিল্প রক্ষার জন্য তাদের এমন আন্তরিক ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এখন দিন পাল্টেছে। ঘাসিটুলার বেত শিল্পের সেই খ্যাতি আজ আর নেই বললেই চলে।
এসব বেতের তৈরি পণ্যের মধ্যে রয়েছে শীতল পাটি, বেতের চেয়ার-টেবিল, সেলফ, সোফাসেট, আলনা, পালঙ্ক, শো-পিসসহ আরও অনেক কিছু।
একসময় পুরো ঘাসিটুলা এলাকার মানুষই বেত শিল্পের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবারই এই শিল্পের আয়ের ওপর নির্ভরশীল ছিল। প্রাচীন এই শিল্পটাকে এখন বাঁচিয়ে রাখতে লড়াই করছেন হাতেগোনা কয়েকজন বেতশিল্পী।
কথা হয় বেত শিল্পের কারিগর সমছু মিয়ার সঙ্গে।
তিনি জানান, বেত শিল্পের এই কদর এখন আর নেই। এককালে সিলেটের পাহাড়, টিলা, চা-বাগান ও গ্রামাঞ্চলে প্রচুর বেত জন্মাতো। তাই সহজেই খুব কম খরচে বেতের জিনিস বানানো যেতো। কিন্তু সেদিন আর নেই। এখন বেত কিনে জিনিস তৈরি করতে হয়। এতে খরচ বেড়েছে। সঙ্গে বেড়েছে জিনিসের দাম। তাও এর ক্রেতা কমে গেছে।
এ পেশায় থেকে সংসার চালানো খুব কষ্টের বলেও জানান তিনি।
আরেক কারিগর সালাউদ্দীন বলেন, বেত শিল্প বাংলাদেশের অমূল্য ঐতিহ্য। এটা টিকিয়ে রাখতে সরকারের হস্তক্ষেপ দরকার আছে।
তিনি জানান, এখনও সিলেটে অনেক পাহাড়-টিলা,পতিত জমি আছে। কৃষি ও বন বিভাগের সহযোগিতায় বেত চাষে এসব এলাকাকে কাজে লাগাতে পারলে এই শিল্প বিলুপ্তির হাত থেকে মুক্তি পেতে পারে।