আইফোন বনাম  অ্যান্ড্রয়েড ফোন

দিন দিন আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে মোবাইল ফোন। আর সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাজারে আসছে চমকদার সব সুবিধা নিয়ে নানান ধরণের স্মার্ট ফোন।

এখন কেউ আর যেমন তেমন ফোন ব্যবহার করে না। ছোট বড় সবার হাতেই এখন স্মার্টফোন। ধারণা করা হচ্ছে কেবল ২০১৪ সালেই স্মার্টফোন বিক্রির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়াবে এক বিলিয়নেরও বেশি।

বাজারে যেসব স্মার্টফোন এখন চলছে সেগুলোর মধ্যে ৯০ শতাংশই হল অ্যাপেলের আইওএস চালিত আইফোন আর গুগলের অ্যান্ড্রয়েড চালিত স্মার্টফোন।

নিজের ব্যবহারের জন্য ফোন কিনতে গিয়ে প্রায় প্রত্যেককেই এই দুটোর মাঝে একটি পছন্দ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। তোমার জন্য কোনটির ব্যবহার সুবিধাজনক হবে, সেটিই জানাতে বসেছি আজ।   

অপারেটিং সিস্টেমঃ অ্যাপল ফোনগুলোর বৈশিষ্ট্য হলো এগুলোর অপারেটিং সিস্টেম আর হার্ডওয়্যার একই প্রতিষ্ঠানের তৈরি। তাই ডিভাইসটির সাথে সফটওয়ারের মেলবন্ধনও হয় বেশ। আইওএসের একটাই অপূর্ণতা হলো অ্যাপল তাদের ব্যবহারকারীর ওপর কিছুটা কর্তৃত্ব করার চেষ্টা করে।

তুমি তোমার আইফোনে গান কিংবা যে কোনো ফাইল রাখতে চাইলে তোমাকে অবশ্যই অ্যাপলের আইটিউনের নজরদারিতে রাখতে হবে।  

তবে অ্যান্ড্রয়েড পুরোটাই উন্মুক্ত। যেকোনো ওয়েবসাইট থেকে যেকোনো ফাইল তোমার পছন্দমত উপায়ে সেখানে রাখতে পারবে। অ্যাপটি কোন ওয়েবসাইট  থেকে ডাউনলোড করছো, তা অ্যান্ড্রয়েডে কোনো সমস্যা করে না।

আকারঃ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে এমন আইফোনের স্মার্টফোন সবচেয়ে হালকাপাতলা এবং ছোট আকারের। ব্যবহার ও বহন করতে সুবিধা। 

অ্যান্ড্রয়েডের স্মার্টফোনগুলো আবার বিভিন্ন আকারের হয়ে থাকে। এটি একই সাথে সুবিধার আবার কখনও অসুবিধারও। বড় স্ক্রিনের ফোনগুলোতে খুব সহজেই ভালো মানের ভিডিও দেখা যায়। আবার স্ক্রিন যত বড় হয়, টাইপ করা তত বেশি সহজ হয়ে যায়। বড় আকার তোমার কাছে সমস্যার সৃষ্টি করবে তখনই, যখন তুমি এটিকে কোথাও রাখতে যাবে। কারণ বিশাল এই ফোন তোমার পকেটে ধরতে চাইবে না। আবার তুমি যদি সেলফি তুলতে চাও, তাহলে তোমাকে দুই হাত ব্যবহার করতে হবে। সেলফি-পাগলদের জন্য বেশ ভালো সমস্যাই তো!

অ্যাপ্লিকেশনঃ স্মার্টফোনকে আক্ষরিক অর্থে স্মার্ট করে তোলার কাজটি করে এর অ্যাপ্লিকেশনগুলো। তাই নিজের চাহিদা অনুযায়ী অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের সুবিধা দেবে, এমন ফোনই কি কিনতে চাও?

আইফোনে যেসব অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহৃত হয় সেগুলো তুলনামূলকভাবে বেশি সুরক্ষিত। পরিমাণে সেগুলো খুব কম। ডেভেলপাররা সাধারণত অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস তৈরির আগে তাদের আইওএস-এর জন্য অ্যাপস বাজারে ছাড়তে চেষ্টা করে । তাই নতুন অ্যাপস এর বিচারে অ্যান্ড্রয়েডের চেয়ে আইফোন অনেকটা এগিয়ে থাকবে।   

দামঃ
বর্তমানে বাজারে থাকা অ্যাপলের তিনটি ফোনই ব্যবহারকারীর কাছে কিছুটা দামি বলে মনে হতে পারে। ক্রেতার এলাকানুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেজর আইফোন কিনলে অবশ্য দামের দিক থেকে কিছুটা সহনীয় হবে। এদিকে কেবলমাত্র কমদামী অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সাথে প্রতিযোগিতা করতে আইফোন ৫সি বাজারে ছাড়া হয়েছে।

ক্রেতা হিসেবে প্রথমে অ্যান্ড্রয়েডের দিকেই বেশিরভাগের নজর যাবে কারণ বাজারে ক্রেতার চাহিদানুযায়ী বিভিন্ন দামের ফোন পাওয়া যায়। তবে আইফোনে যেসব সুবিধা পাওয়া যাবে, সেগুলো অ্যান্ড্রয়েডে পেতে চাইলে খরচ প্রায় আইফোনের কাছাকাছিই হয়ে যাবে। প্রতিযোগিতায় টিকতে নির্মাতারা চেষ্টা করে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের দাম কিছুটা কম রাখতে।

উভয়ক্ষেত্রেই সিমকার্ডের জন্য আলাদাভাবে খরচ করতে হবে।

যে ফোনই কিনতে চাও না কেন, মাথায় রাখবে তোমার চাহিদার কথা। তোমার প্রয়োজনীয় সুবিধাগুলো যে ফোন তোমাকে দিতে পারবে সেটি কেনাই উত্তম।

Related Stories

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com