১৯ মে তার দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিকী।
তিনি ১৯২২ সালের ২৩ জুন কলকাতায় জন্ম নেন। ১৯৪২ সালে কলকাতা সরকারি আর্ট স্কুল থেকে চারুকলায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর কলকাতা থেকে ঢাকায় চলে আসেন।
সফিউদ্দিন আহমেদ ইংল্যান্ডের সেন্ট্রাল স্কুল অফ আর্টস অ্যান্ড ক্র্যাফটস্ থেকে 'এচিং ও এনগ্রেভিংয়ে' সম্মানের সঙ্গে ডিপ্লোমা ডিগ্রি লাভ করেন।
শিল্পগুরু সফিউদ্দীন আহমেদ তার শৈল্পিকতা দিয়ে আমাদের ছাপচিত্র জগৎকে সমৃদ্ধ করেছে। চল্লিশের দশকে কলকাতার আর্ট কলেজে পড়ার সময়ে তিনি ছাপচিত্রে পারদর্শী হয়ে উঠেন। পরবর্তীতে উড এনগ্রেভিং, ড্রাই পয়েন্ট, এচিং, অ্যাকুয়াটিন্ট, কপার এনগ্রেভিং দিয়ে ছাপচিত্রকে আরও সমৃদ্ধ করেছেন।
ছাপচিত্রের পাশাপাশি তিনি জলরং, তেল রং-এর কাজেও অসামান্য দক্ষতা দেখিয়েছেন।
লন্ডনে থাকার সময় সফিউদ্দিন আহমেদ কালোর বৈচিত্র্যপূর্ণ ব্যবহার করেন এচিং-অ্যাকুয়াটিন্টের মাধ্যমে। নব্বইয়ের দশকে তিন বছরের মতো তিনি নিরবচ্ছিন্নভাবে বেশ কিছু রেখাচিত্র আঁকেন যা ‘ব্ল্যাক সিরিজ’ বা ‘কালো চিত্রমালা’ নামে পরিচিত।
তার শিল্পকর্মে ১৯৫২ ভাষা আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে। কলকাতায় আঁকা ছবিতে এসেছে মহানগরের বস্তিজীবন, বিহারের নানা অঞ্চলের সৌন্দর্য, দুমকার প্রকৃতি ও সাঁওতাল-জীবন এবং ঢাকায় আঁকা ছবিতে বিষয়বস্তু হিসেবে এসেছে বন্যা, জাল, মাছ, নৌকা, ঝড় প্রভৃতি প্রাকৃতিক উপাদানের পাশাপাশি নানা শ্রমজীবী মানুষ।
তিনি, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন ও অন্যান্য শিল্পীরা মিলে ঢাকা আর্ট কলেজ বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠায় বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন।
তিনি ১৯৪৫ সালে কলকাতা একাডেমি অব ফাইন আর্ট থেকে একাডেমি প্রেসিডেন্ট পদক পান। এছাড়াও তিনি একুশে পদক, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারসহ আরও অনেক পুরস্কার পেয়েছেন।