স্বাগত পহেলা বৈশাখ

এসেছে বাঙালির প্রাণের 'বর্ষ বরণ' উৎসব। প্রতিবছরই নানা আয়োজনে উদযাপিত হয় 'বাংলা নববর্ষ'।

সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রমনার বটমূলে 'ছায়ানট'-এর পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় বাঙালির এই সর্বজনীন উৎসব । গান দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি মুছে ফেলার চেষ্টা চলে অতীতের সব দুঃখ-গ্লানি।

রমনায় বর্ষবরণ উৎসব শুরু হয় মূলত পাকিস্তানি শাসকদের বাঙালি সংস্কৃতিকে দমন করতে চাওয়ার প্রতিবাদ হিসেবে।

১৯৪৭ সালের পর থেকেই পাকিস্তান আমাদের সংস্কৃতিকে দমিয়ে রাখতে চেয়েছে। এ সময় পাকিস্তান সরকার রবীন্দ্র-সংগীত নিষিদ্ধের ঘোষণা দেয়। এরই প্রতিবাদে ১৯৬৫ সালের পহেলা বৈশাখে রমনায় ছায়ানট রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত 'এসো হে বৈশাখ' গানটি দিয়ে বাংলা বছরকে বরণ করে নেয়। ১৯৭২ সালের পর এটি হয়ে ওঠে আমাদের জাতীয় উৎসব।

সে পথ ধরেই প্রতি বছর রমনায় ছায়ানটের বর্ষবরণ উৎসব শুরু হয় সূর্যোদয়ের সময় থেকে।

একটা মজার কথা হল আমরা যে রমনার বটমূলে উৎসবে মাতি সেটা কিন্তু বটগাছ নয়; সেটি একটি অশ্বথ গাছ।

আমাদের বৈশাখী উৎসবের আরেকটি আয়োজন হল 'মঙ্গল শোভাযাত্রা'। এই শোভাযাত্রাটিও আমাদের আরেকটি প্রতিবাদের অংশ।

১৯৮৯ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময় সামরিক সরকারের নির্যাতনের প্রতিবাদ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা নানারকম প্রতিকৃতি ও রং-বেরঙের মুখোশ নিয়ে প্রথমবার শোভাযাত্রা বের করে। এর নাম ছিল 'আনন্দ শোভাযাত্রা'।

পরে ১৯৯৬ সালে এই আনন্দ শোভাযাত্রার নাম 'মঙ্গল শোভাযাত্রা' দেয়া হয়।

রমনায় ছায়ানটের বর্ষবরণ উৎসব শেষে সকাল ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা।

এ বছর মঙ্গল শোভাযাত্রায় দুঃসময়ের কাণ্ডারি হিসেবে বাঘের পিঠে সওয়ার হবেন সত্য নারায়ণ।

আর শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের শততম জন্মবার্ষিকী হওয়ায় এবারের শোভাযাত্রা হবে আরো বেশি বর্ণাঢ্য।

বাংলা সংস্কৃতির নানা প্রতীকী উপকরণে সজ্জিত শোভাযাত্রাটি দোয়েল চত্বর হয়ে চারুকলার সামনে এসে শেষ হবে।

ধর্মীয় ভেদাভেদ, গোত্রীয় পার্থক্য সব মুছে ফেলে বাঙালির সর্বজনীন উৎসব পহেলা বৈশাখ।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com