মুক্তিযুদ্ধের অধিনায়ক এমএজি ওসমানীর জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনী ও সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি ছিলেন মুহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানী।
মুক্তিযুদ্ধের অধিনায়ক এমএজি ওসমানীর জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি

তিনি জেনারেল এমএজি ওসমানী নামেই বেশি পরিচিত। ১৯১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর সিলেটের সুনামগঞ্জে জন্ম নেন ওসমানী। তবে তার পৈতৃক নিবাস সিলেটের বালাগঞ্জে।

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ওসমানী ভারতে যান। ১৯৭১ সালের  ১১ এপ্রিল তাজউদ্দিন আহমদ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে দেওয়া ভাষণে ওসমানীকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে ঘোষণা দেন৷

পরে ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে বাংলাদেশ সরকার শপথ গ্রহণ করে। সেখানেও ওসমানীকে করা হয় মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি।

ওসমানী সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে  প্রত্যেক সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার হিসেবে এক একজন সেনাবাহিনীর অফিসারকে নিয়োগ দেন।

সেক্টর ও বাহিনীর মাঝে সমন্বয়, রাজনৈতিক নেতৃত্বের সাথে যোগাযোগ, অস্ত্রের যোগান নিশ্চিত করা, গেরিলা বাহিনীর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা নিষ্ঠার সাথে এসব কাজ করেন তিনি।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে ১২ এপ্রিল থেকে যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন৷

পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ছিল দক্ষ এবং সংখ্যায় অনেক বেশি৷ তাই ওসমানীর রণকৌশল ছিল প্রথমে শত্রুকে নিজেদের ছাউনিতে আটকে রাখা এবং তাদেরকে যোগাযোগের সবগুলো মাধ্যম থেকে বিছিন্ন করে রাখা৷

এক মাসের মধ্যেই তিনি উপলব্ধি করেন,  এত কম সৈন্য নিয়ে শত্রুকে ছাউনিতে আটকে রাখা গেলেও, বিজয় সম্ভব নয়।

বিষয়টি তিনি সরকারকে জানিয়ে যুদ্ধের  কৌশল পাল্টাটা ইস্ট পাকিস্তান রেজিমেন্টের বাঙালি সৈন্য, আনসার, পুলিশ বাহিনী ও যুবকদের নিয়ে একটি গেরিলাবাহিনী গঠন করেন।

এ লড়াইয়ে ওসমানীর বাহিনীতে নৌবাহিনী ছিল না। তবে নিয়মিত নৌবাহিনীর কিছু অফিসার তার সাথে যোগাযোগ রাখতেন৷

অগাস্টের মাঝামাঝিতে নদীপথে শত্রুর চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে আসে। নৌবাহিনী গঠনের পর যুদ্ধ-সংকটের খানিক  অবসান হলেও বিমানবাহিনীর অভাবে ওসমানী ছোটো  একটি বিমানবাহিনীও গঠন করেছিলেন।

রক্তক্ষয়ী নয় মাস যুদ্ধের পর শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানি বাহিনী, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সামরিক বাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করে।

অর্জিত হয় বাংলাদেশ নামের একটি দেশের স্বাধীনতা। পৃথীবীর মানচিত্রে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে ইতিহাসের পাতায় এ নাম লেখা হয়।

জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীর ৯৯তম জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি।  

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com