পাড়াতলী গাঁয়ের কবি

সাদা ধবধবে চুল আর কালো-বাদামী ফ্রেমের চশমায় ঝকঝকে হাসিমাখা মুখের কবি বলতেই মনে পড়ে শামসুর রাহমানের নাম।
পাড়াতলী গাঁয়ের কবি

কুড়ি শতাব্দীতে হাতে গোনা যে কজন কবি সাহিত্যিক আধুনিক ঘরানার কবি হিসেবে পাঠকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন তার মধ্যে অন্যতম শামসুর রাহমান।

একই সাথে কবিতা, গদ্য, সাংবাদিকতা, শিশুসাহিত্য ও প্রবন্ধ, সব ক্ষেত্রেই তিনি উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখেছেন। এই কবির ১১ তম মৃত্যুবার্ষিকী ১৭ অগাস্ট।

১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর ঢাকার মাহুতটুলিতে নানাবাড়িতে জন্ম নেন রাহমান। তবে তার পৈতৃক বাড়ি ছিল নরসিংদী জেলার রায়পুরের পাড়াতলী গ্রামে।  

১৯৪৫ সালে পুরনো ঢাকার পোগোজ স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন (এসএসসি) ও ১৯৪৭ সালে ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আই এ (এইচএসসি) পাস করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হলেও শেষ পর্যন্ত পড়া শেষ না করেই ‘দ্য ডেইলি মর্নিং নিউজ’ ও দৈনিক পাকিস্তানের (স্বাধীনতা পরবর্তী দৈনিক বাংলা) সহ-সম্পাদ, রেডিও পাকিস্তানের অনুষ্ঠান প্রযোজক, দৈনিক বাংলা ও সাপ্তাহিক বিচিত্রার সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেন।

রাহমানের সাহিত্যচর্চার হাতেখড়ি যুবক বয়সেই। ১৯৪৯ সালে বিশ বছর বয়সেই তার প্রথম কবিতা প্রকাশ হয় সাপ্তাহিক সোনার বাংলা পত্রিকায়।

এরপর ১৯৬০ সালে প্রকাশিত হয় প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে’। তার লেখনিতে  নগর জীবনের আনন্দ-বেদনা, স্বাধীনতার চেতনা, স্বৈরশাসনে প্রতিবাদী ও সংগ্রামী চেতনা প্রতিফলিত হয়।

রৌদ্র করোটিতে, বিধ্বস্ত নিলীমা, নিজ বাসভূমে,বন্দীশিবির থেকে, ফিরিয়ে নাও ঘাতক কাঁটা, আদিগন্ত নগ্ন পদধ্বনি, এক ধরনের অহংকার, বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখে, উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে,কবিতার সঙ্গে গেরস্থালি, অস্ত্রে আমার বিশ্বাস নেই, এক ফোঁটা কেমন অনল, দেশদ্রোহী হতে ইচ্ছে করে, ঝর্ণা আমার আঙুলে, বুক তার বাংলাদেশের হৃদয়, হৃদয়ে আমার পৃথিবীর আলো, হরিণের হাড়, আকাশ আসবে নেমে, হেমন্ত সন্ধ্যায় কিছুকাল, নক্ষত্র বাজাতে বাজাতে, হৃদপদ্মে জ্যোৎস্না দোলে, ভগ্নস্তূপে গোলাপের হাসি, কৃষ্ণপক্ষে পূর্ণিমার দিকে, অন্ধকার থেকে আলোয়, না বাস্তব না দু:স্বপ্ন শামসুর রহমানের উল্লেখযোগ্য কাব্য।

পেয়েছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক, স্বাধীনতা পুরস্কার, আদমজী পুরস্কার, সাউথ এশিয়ান লিটারেচার ফর দ্য মাস্টার পুরস্কার এর মত বহু সম্মাননা।

কবিকে ঢাকার বনানীতে সমাধিস্থ করা হয়।  

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com