আঠারোর তারুণ্যেই পূর্ণতা পেয়েছিলেন কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য। একুশের আগেই ছাড়পত্রের লেখাকে বাস্তব করে দিয়ে চলে গেলেন। ছেড়ে দিলেন স্থান। ১৫ অগাস্ট এই তরুণ কবি জন্মেছিলেন।
সময়টা ১৯২৬ সালের ১৫ অগাস্ট। কলকাতার কালিঘাটের ৪৩, মহিম হালদার স্ত্রিটের মামার বাড়িতে জন্ম নেন।
বাবার নাম নিবারন ভট্টাচার্য এবং মা সুনীতি দেবী। তবে সুকান্তের পৈতৃক নিবাস ছিল বাংলাদেশের তৎকালীন ফরিদপুর জেলার (বর্তমানে গোপালগঞ্জ জেলা) কোটালিপাড়ার উনশিয়া গ্রামে।
সুকান্তর পড়ালেখার হাতেখড়ি গ্রামের পাঠশালাতেই। পরে বেলেঘাটার দেশবন্ধু স্কুল থেকে ১৯৪৫ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশ নিলেও কৃতকার্য হননি কবি।
এরপর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাজীবনের পাঠ চুকিয়ে যোগ দেন বামপন্থী রাজনীতিতে।
সুকান্তের লেখালেখির শুরু হয় শৈশবেই। স্কুলের হাতে লেখা ‘সঞ্চয়’ নামে একটি পত্রিকায় হাসির গল্প লিখে শুরু হয় তার পথচলা। এরপর আর থেমে থাকেননি।
'শিখা’ নামের সাহিত্য পত্রিকায় বিবেকান্দের জীবনী ছাপা হয়। এগারো বছর বয়সে রচনা করেন ‘রাখাল ছেলে’ গীতিনাট্য। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় সম্পাদনা করেন হাতে লেখা পত্রিকা ‘সপ্তমিকা’।
সুকান্ত ভট্টাচার্যকে একজন আধুনিক ঘরানার প্রগতিশীল কবি বলা হয়ে থাকে। তার স্বচ্ছন্দ, বলিষ্ঠ ও নিখুঁত লেখনিতে সমাজের দু:খ, দুর্দশা, শোষন, পরাধীনতা, সাধারণ মানুষের জীবনসংগ্রাম, যন্ত্রণা ও ক্ষোভসহ ভবিষ্যৎ পৃথিবীর একটি সুন্দর সমাজের স্বপ্ন তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন। তার কবিতায় গণমানুষের কষ্ট দেখে ব্যথিত হয়েছেন, গেয়েছেন বিদ্রোহের গান। তাই সুকান্তকে গণমানুষের কবিও বলা হয়।
তার সাহিত্য-সাধনার মূলক্ষেত্র কবিতা হলেও গান, গল্প, নাটক এবং প্রবন্ধসহ সাহিত্যের সবক্ষেত্রে তার ছিল পথচলা।
নিজের ব্যাপারে উদাসীনতার কারণে অচিরেই কবির শরীরে বাসা বাঁধে ম্যালেরিয়া ও পরে ভোগেন যক্ষ্মারোগে।
এই রোগের ফলেই কলকাতায় ২১ বছর বয়সে মারা যান।