ঈদি প্রথা

ঈদ মানে আনন্দ, খুশি। ঈদে বড়দের চেয়ে ছোটদের আনন্দই যেন বেশি!
ঈদি প্রথা

ঈদ শুরুর অনেক আগে থেকেই চলতে থাকে কেনাকাটা। এই বিষয়েও সবচেয়ে বেশি উৎসাহী শিশুরা। তারা নতুন কাপড় লুকিয়ে রাখে ঈদের দিন অব্দি। কেউ দেখে ফেললে নাকি ঈদের নতুন পোশাকের সব আনন্দ শেষ হয়ে যাবে।

ঈদকে কেন্দ্র করে চাঁদ রাতে বেশ আনন্দ হয়। আকাশে নতুন চাঁদ দেখার জন্য অপেক্ষা, হৈ-হুল্লোড় করে শিশুরা। এরপর শুরু হয় হাতে মেহেদি দেওয়ার পর্ব। বাড়িতে বাজতে থাকে 'রমজানের ওই রোজার শেষে এল খুশির ঈদ।'

ঈদে শিশুদের এত আনন্দের মধ্যে আবদারের তালিকা একটু দীর্ঘই থাকে। এদিন সকালে পরিবারের বড় সদস্যদের কাছ থেকে ঈদি বা সালামি তাদের চাই-ই চাই। কার কাছ থেকে কত আদায় করবে শিশুরা তা আগেই হিসাব কষে রাখে। আর হ্যাঁ এক্ষেত্রে পুরনো টাকা চলবেই না। সালামি হিসেবে চাই কড়কড়ে নতুন টাকা।

বড়রাও হুঁশিয়ার থাকেন। তারাও সংগ্রহে রাখেন নতুন টাকা। এ সময় দশ, বিশ, পঞ্চাশ টাকার নতুন বান্ডেল কিনতে পাওয়া যায়। ১০০ টাকা কিনতে গুনতে হয় ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকাও।

বড়রা এই দায়িত্ব সেরে রাখেন। কিন্তু বাজেট যে শিশুরা কষে রেখেছে আরো আগেই!  মনমতো না হলে ছাড়বে না কোনো মতেই। তাদের বাজেট অনুযায়ী সালামি দিতে হয়।

টাকা পাওয়ার পর শিশুদের খুশি দেখে কে? স্বাধীনভাবে ইচ্ছেমত যে কোনো জিনিস তারা কিনতে পারে তারা।

চাচা, দাদা, ফুপি, ভাইয়া সবাইকেই ঈদের সালামি দিতে হয়। আর বাবাকে বরাবর একটা বড় অংকই দিতে হয়। 

কিন্তু কবে শুরু হয় এই প্রথা?

ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে রোজাপালন অনেক পুরোনো রীতি। তবে রোজার ঈদ বলতে কিছু ছিল না। প্রথমবারের মতো মদিনায় এর প্রচলন হয়। যা ঘটে ৬২৪ খ্রিস্টাব্দের ৩১ মার্চ। এর ছয় বছর পর মক্কায় ঈদ শুরু হয় ৬৩০ খ্রিস্টাব্দে।

এ দেশে ঈদ পালনের নানান নিয়ম চালু রয়েছে। আরবে ঈদের নামাজ শেষে দুপুরে খাবারের আগে সালামি দেওয়া হয়। বাংলাদেশে যেটা নামাজে যাওয়ার আগে দেওয়া হয়।

সালামি নিয়ে ধর্মীয় বিধি-নিষেধ নেই। সামাজিকভাবে এ প্রথা চালু হয়েছে। শিশুরা আনন্দ প্রিয়, ঈদকে মাতিয়ে রাখে শিশুরাই। তাই তাদের আনন্দকে বাড়তি রূপ দিতে চান বড়রা। এ থেকেই ঈদি বা সালামী প্রথার জন্ম।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com