শুভ জন্মদিন চে

শোষিতের পক্ষে লড়াই করা বিপ্লবী চে গেভারার ৮৯তম জন্মদিন ১৪ জুন। সারাজীবন মানবতা আর সাম্যের জন্য লড়াই করে প্রাণ দিতে হয়েছিল তাকে। এই শ্রেষ্ঠ মানুষটির পুরো নাম অ্যার্নেস্তো চে গেভারা।
শুভ জন্মদিন চে

বিপ্লবী চে ১৯২৮ সালের ১৪জুন জন্ম নেন আর্জেটিনার এর্নেস্তো গেভারা রোজারিও এলাকায়। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন বড়। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন অস্থির। চপলতা দেখে তার বাবা বুঝতে পেরেছিলেন যে আইরিস বিদ্রোহের রক্ত তার এই ছেলের ধমনীতে বইছে।  

খুব শৈশব থেকেই সমাজের বঞ্চিত, অসহায়, দরিদ্রদের প্রতি এক ধরনের মমত্ববোধ তাঁর ভেতর তৈরি হতে থাকে। একটি সমাজতান্ত্রিক রাজনৈতিক ধারার পরিবারে বেড়ে ওঠার করনে খুব অল্প বয়সেই তিনি রাজনীতি সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান লাভ করেন।

হাঁপানিতে সারা জীবন ভোগা সত্ত্বেও তিনি দারুন শল্যবিদ ছিলেন। ১২ বছর বয়সে তিনি দাবা খেলা শেখেন। তার খেলধুলার পছন্দ তালিকায় ছিল সাঁতার, ফুটবল, গলফ, শ্যুটিং। চে সাইক্লিংয়েও অনুরক্ত ছিলেন।   

বয়:সন্ধি থেকে শুরু করে সারাটা জীবন তিনি কবিতার প্রতি আসক্ত ছিলেন। গেভারা পরিবারে ছিল তিন হাজারেরও বেশি বই যা তাকে করে তোলে একজন জ্ঞান পিপাসু ও আক্লান্ত পাঠক।   

বিপ্লবের অগ্নিপুরুষ আর গেরিলা নেতা হিসেবে বিশ্ব তাকে স্মরণ করে। তিনি ছিলেন একাধারে বিপ্লবী, লেখক, বুদ্ধিজীবী, গেরিলা নেতা, কূটনীতিবিদ ও সমরবিদ। যদিও পেশায় ছিলেন চিকিৎসক। চিকিৎসাবিজ্ঞানে পড়ার সময় তিনি লাতিন আমেরিকা ভ্রমণ করেছিলেন। এই অঞ্চলে একচেটিয়া পুঁজিবাদ, নব্য ঔপনিবেশিকতাবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসনের সমাধান হিসেবে বিশ্ব বিপ্লবের কথা ভেবেছিলেন।

বিশ্ব বিপ্লবের প্রেরণাকে ধারণ করে গুয়াতেমালার সামাজিক সংস্কার আন্দোলনে নিজেকে জড়িয়ে নেন চে। ১৯৫৪ সালে সিআইএ-এর ষড়যন্ত্রে গুয়াতেমালার রাষ্ট্রপতি গুজমানকে ক্ষমতাচ্যুত করা হলে চে গেভেরা আরো উদ্যমী হয়ে ওঠেন।  

১৯৫৪ সালের শুরুর দিকে গেভারা মেক্সিকো শহরে পৌঁছান এবং সদর হাসপাতালে এলার্জি বিভাগে চাকরি করেন।পাশাপাশি ন্যাশনাল অটোনোমাস ইউনিভির্সিটি অব মেক্সিকোতে চিকিৎসা বিষয়ে প্রভাষক এবং লাতিনা সংবাদ সংস্থার চিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেন।

মেক্সিকো শহরে বসবাসের সময় রাউল ও ফিদেল কাস্ত্রোর সঙ্গে চে’র কথা হয়। তিনি তাদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেন। মার্কিন মদতপুষ্ট কিউবান একনায়ক ফুলজেনসিও বাতিস্তাকে উৎখাত করার জন্য সমুদ্রপথে কিউবায় প্রবেশ করেন।

এরইমধ্যে চে বিপ্লবী সংঘের এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড পদে তার পদোন্নতি দেওয়া হয়। এরপর বাতিস্তা সরকারকে উৎখাত করার লক্ষ্যে দুই বছর ধরে চলা গেরিলা সংগ্রামের সাফল্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি।  

১৯৬৫ সালের ২৪ এপ্রিল তিন সহচর নিয়ে কঙ্গোয় আসেন। এখানে তিনি কঙ্গোর গৃহযুদ্ধে অংশ নেয়া লুমুম্বা ব্যাটেলিয়ন সংগঠনের দায়িত্ব নেন। বলিভিয়ার সেনাবাহিনীর ভাষ্যমতে, তারা চে’কে ৭ অক্টোবর গ্রেপতার করে এবং তার মৃত্যু হয় ১৯৬৭ সালে ৯ অক্টোবর  বেলা একটা ১০ মিনিটে।

জন্মদিনের নিরন্তর শুভেচ্ছা এই বিপ্লবীকে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com