চন্দ্রদ্বীপের রাজার প্রেমে রানির নামে

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়ন এককালে ছিল চন্দ্রদ্বীপ রাজ্যের শেষ রাজধানী।
চন্দ্রদ্বীপের রাজার প্রেমে রানির নামে

চন্দ্রদ্বীপ রাজ্যের রাজা শিব নারায়ণ রায় ভালোবেসে রানি দুর্গাবতী দেবীর নামে দুর্গাসাগর দিঘি খনন করেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। আর কালের সাক্ষী হিসাবে দিঘিটি আজও টিকে আছে। তবে স্থানীয়ভাবে এটি মাধবপাশা দিঘি নামেও পরিচিত।

রাজকোষ থেকে তিন লাখ টাকা খরচ করে একটি দিঘি খনন করার উদ্যোগ নেন। বলা হয়, রানী দুর্গাবতী যতদূর হেঁটে যেতে পারবেন ততখানি জমি নিয়ে দিঘি খনন করবেন বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রানি প্রায় ১২২ একর (৬১ কানি) জমি হেঁটেছিলেন।   

এই ইতিহাস নিয়ে মতভেদ রয়েছে। ‘বৃহত্তর বরিশালের ঐতিহাসিক নিদর্শন গ্রন্থ’-এ লেখক লিখেছেন, “১৭শ সালের শেষের দিকে চন্দ্রদ্বীপের পঞ্চদশ রাজা ও বাংলার বারো ভূঁইয়াদের মধ্যে অন্যতম শিব নারায়ন রায় চন্দ্রদ্বীপ বংশের রাজা হিসেবে রাজ্য পরিচালনার দায়িত্ব পান।

শিবনারায়ণের অকাল মৃত্যুর পর তার বড় ছেলে লক্ষী নারায়ণ রাজ্যের দায়িত্ব পান। কিন্তু লক্ষী নারায়ণও অকালে মারা যান। তার মৃত্যুর পর রানি দুর্গাবতী ছোট ছেলে জয় নারায়ণের পক্ষে কিছুকাল রাজ্য পরিচালনা করেন।

তখন ঐ অঞ্চলের প্রজাদের পানির কষ্ট দূর করার জন্য ১৭৮০ সালে প্রকাণ্ড এক জলাশয় খনন করা হয়।

পরবর্তীতে রানির নাম অনুসারে সেই জলাশয় দুর্গাসাগর নামে পরিচিতি পায়।

কালের স্রোতে কেটে গেছে প্রায় ৪০০ বছর। এখন আর সেই রাজত্ব নেই, নেই রাজাও। তবে দিঘিটি আজও টিকে আছে। তবে ২,৫০০ হেক্টর আয়তনের এই দিঘিটিকে স্বাধীনতার পর ১৯৯৬ সালে সংস্কার করা হয়।

‘দুর্গাসাগর দিঘি উন্নয়ন ও পাখির অভয়ারণ্য’ প্রকল্পের আওতায় নিয়ে এটিকে একটি পর্যটন কেন্দ্র বানানো হয়। শান বাঁধানো ঘাট, পিকনিক স্পট, ওয়াকওয়ে, পাখিদের কলতান, গাছপালা ঘেরা সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ আর পানিতে ভেসে চলা হাসের ঝাঁকের সাথে তাল মেলান হরিণের ছোটাছুটিতে মুখর থাকে দিঘির চারপাশের পরিবেশ। 

শীত মৌসুমের নানান প্রজাতির অতিথি পাখিরাও এখানে এসে আশ্রয় নেয়।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com