ব্রহ্মপুত্র আঁকিয়ে হতে শিখিয়েছিল যাকে

জয়নুল আবেদীন আর বাংলার চিত্রশিল্প এক সুতোয় বাঁধা। একে অন্যের পরিপূরক। আর তার আঁকিয়ে হয়ে ওঠার বিচিত্র ঘটনার চিরাবসান ঘটে ১৯৭৬ সালের ২৮ মে।
ব্রহ্মপুত্র আঁকিয়ে হতে শিখিয়েছিল যাকে

চোখের সামনে যা দেখতেন তাই ফুটিয়ে তুলতেন তুলির আঁচড়ে। শিল্পকলায় তার কল্পনাশক্তি ছিল তুখোড়। তাই তিনি যতটা জয়নুল তার চেয়ে বেশি ‘শিল্পাচার্য’।

জয়নুল আবেদিন ১৯১৪ সালে ময়মনসিংহে জন্ম নেন। ব্রহ্মপুত্রের তীরে তার বেড়ে উঠা। ছোটবেলা থেকেই তিনি দিন কাটাতেন নদীর পাশে। বেড়ে উঠেছেন প্রকৃতির ছোঁয়ায়।  

শিশুকাল থেকেই তার আঁকার প্রতি ছিল ঝোঁক। যা দেখে ভাল লাগতো তাই আঁকার চেষ্টা করতেন। রঙতুলির মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতেন প্রকৃতির অপরূপ দৃশ্য।

নয় ভাই-বোনের মধ্যে জয়নুল ছিলেন অন্য ধাঁচের। আঁকাআঁকির প্রতি তীব্র ইচ্ছাশক্তি নিয়ে তিনি ১৯৩৩ সালে ভর্তি হন কলকাতা সরকারি আর্ট স্কুলে। সেখানে পড়াশোনা করেন পাঁচ বছর।

চিত্রকলায় দূরদর্শিতার জন্য ১৯৩৮ সালে জলরঙে এঁকে সর্বভারতীয় চিত্রকলা প্রদর্শনীতে স্বর্ণপদক পান। মূলত ব্রহ্মপুত্র নদই তার অঙ্কনের মূল বিষয় ছিল। এ স্বর্ণপদক লাভের মাধ্যমে তিনি পরিচিতি পেতে শুরু করেন।

তিনি স্বাধীনভাবে তার কলা চর্চা চালিয়ে যেতে থাকেন। এরপর ১৯৪৩ সালে দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। দুর্ভিক্ষের ওপর আঁকা তার ছবিগুলো সারা বিশ্বে সাড়া ফেলে দেয়।

১৯৫১ সালে তিনি মাত্র ১৮ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু করেন গভর্নমেন্টের আর্ট স্কুলের যাত্রা। ১৯৬১ সালে এটি প্রথম শ্রেণির সরকারি কলেজ হিসেবে দাঁড়ায়।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর এ কলেজের নাম হয় ‘বাংলাদেশ চারু ও কারুকলা মহা বিশ্ববিদ্যালয়’।

জয়নুল আবেদীনের নেতৃত্বে এ দেশে শিল্প অনেক এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশে চারুকলার বিস্তারে তার অবদান অতুলনীয়। 

এই মহান শিল্পীর মৃত্যুদিনে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com