সত্যজিৎ রায়ের প্রয়াণ দিবস
তিনি ছড়াকার সুকুমার রায়ের ছেলে এবং শিশু সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী তার পিতামহ।
১৯২১ সালে কলকাতা শহরে সত্যজিৎ রায়ের জন্ম হলেও পূর্বপুরুষের ভিটা ছিল বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার মাশুয়া গ্রামে।
সত্যজিতের তিন বছর বয়সেই বাবা সুকুমার রায় মারা যান। মা সুপ্রভা দেবী তাকে কষ্ট করে বড় করেন। উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে সত্যজিৎ কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়তে যান। কিন্তু ১৯৪০ সালে মায়ের অনুরোধে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গেলেও পড়াশোনা অসমাপ্ত রেখেই ১৯৪৩ সালে কলকাতায় ফিরে আসেন তিনি।
সত্যজিৎ ছিলেন একাধারে চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার, সাহিত্যিক, সঙ্গীত পরিচালক ও গীতিকার। বিশেষ করে চলচ্চিত্র পরিচালক ও সাহিত্যিক হিসেবে তিনি বিশেষভাবে পরিচিত।
তিনি ৩৭ টি পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র, প্রামান্যচিত্র ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। তার নির্মিত পথের পাঁচালী, অপরাজিত ও অপুর সংসার চলচ্চিত্রকে একত্রে অপু ত্রয়ী বলা হয় এবং এই চলচ্চিত্র তিনটি তার জীবনের শ্রেষ্ঠ কাজ হিসেবে স্বীকৃত।
এছাড়া বাংলা সাহিত্যে তিনি সৃষ্টি করে গেছেন অমর দুই চরিত্র গোয়েন্দা ফেলুদা ও বিজ্ঞানী প্রফেসর শঙ্কু। তারিনী খুড়ো তার আরেকটি উল্লেখযোগ্য চরিত্র। তিনি লিখে গেছেন অসংখ্য উপন্যাস ও গল্প; যেসব লেখা কালের গণ্ডি পেরিয়ে আজও সবার প্রিয়।
সত্যজিৎ রায় তার দীর্ঘ কর্মজীবনে প্রচুর পুরস্কার অর্জন করেছেন। তারমধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো মৃত্যুর কিছুদিন আগে পাওয়া অস্কার পুরস্কার।
তার প্রথম চলচ্চিত্র পথের পাঁচালী নির্মাণের জন্য তিনি ১১টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন। এমনকি তিনিই দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব যাকে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে। নিজ দেশেও দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার, ভারতরত্নসহ অসংখ্য পুরস্কার পান।
১৯৯২ সালের ২৩ এপ্রিল ৭০ বছর বয়সে সত্যজিৎ কলকাতায় মারা যান।