হারিয়ে যাচ্ছে মাটির ঘর

কালের গহ্বরে হারিয়ে যাচ্ছে মাটির ঘর। এর বদলে জায়গা করে নিচ্ছে ইট, সিমেন্ট ও টিনের বাড়ি।
হারিয়ে যাচ্ছে মাটির ঘর

ঠাকুরগাঁওয়ের প্রতিটি বাড়িতে আগে একটি করে হলেও মাটির ঘর চোখে পড়ত। প্রায় প্রতিটি গ্রামের ছোট সুন্দর ছিমছাম মাটির ঘরগুলো নজর কাড়ত সবার। গ্রামগুলোকে ছোট ছোট সাদা বাড়িতে স্বর্গ রাজ্য মনে হতো। ঝড়, বৃষ্টি থেকে বাঁচার পাশাপাশি তীব্র গরম ও শীত থেকে  বাঁচতে এই ঘরের জুড়ি নেই।

তবে মাটির তৈরি এসব ঘর এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। এই ঘরগুলো শীত বা গরমে থাকার জন্য বেশ আরামদায়ক। তবে আধুনিক দালান-কোঠার ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে মাটির ঘর। এখন আর তেমন চোখে পড়ে না গ্রামীণ এই ঐতিহ্য।

কারিগররাও এখন এ পেশা ছেড়ে দিয়েছেন। এ নিয়ে হ্যালোর সঙ্গে কথা হয় জেলার শুকান পুকুড়ি এলাকার মাটির ঘরের কারিগরের।

তিনি বলেন, “এখন আর মানুষ মাটির ঘর বানায় না, ইটের ঘর বানায়।”

মাটির ঘর তৈরির গল্প বলতে গিয়ে তিনি জানালেন কীভাবে এই ঘর তৈরি করতে হয়।

তিনি বলেন, “এঁটেল মাটি কাদায় পরিণত করে দুই-তিন ফুট চওড়া করে দেয়াল তৈরি করতাম। ১০-১৫ ফুট উঁচু দেয়ালে কাঠ বা বাঁশের সিলিং তৈরি করে তার ওপর খড় অথবা টিনের ছাউনি দিতাম। একটি ঘর তৈরি করতে আমাদের এক মাসের বেশি সময় লাগত।”

খোচা বাড়ির আবাদুল লতিফ নামের একজন বলেন, “আমি মাটির বাড়িতে বসবাস করতাম। কিন্তু এখন ছেলেমেয়ে বড় হয়েছে। মাটির ঘর ভেঙে ইটের বাড়ি তৈরি করেছি।

“এখন শীতের দিনে ঠাণ্ডা লাগে আর গরমের দিনে প্রচণ্ড গরম। মাটির ঘরে আগে ফ্যানও লাগত না। এখন ফ্যান ছাড়া গরমের দিনে থাকাই যায় না।”

আমরা আধুনিক হয়েছি। বদল এসেছে জীবন যাপনে। এরই হাত ধরে বদল হচ্ছে আমাদের পোশাক, খাবার, থাকার জায়গারও। বদল  অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। তবুও ভালো লাগে মাটির ঘর, মাটির রাস্তা আর গরুর গাড়ির চাকার ক্যাঁচক্যাঁচ।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com