বিতর্কিত নানা বক্তব্যের কারণে বরাবরই সমালোচিত হয়েছেন তিনি। নবনির্বাচিত এই প্রেসিডেন্টকে নিয়ে আগ্রহ রয়েছে অনেকের।
১৯৪৬ সালের ১৪ জুন ফ্রেড ট্রাম্প ও মেরি ট্রাম্পের ঘরে জন্ম নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার বাবা ছিলেন নিউইর্য়কের এক ধনকুবের। তার শৈশব কেটেছে নিউইয়র্ক শহরের কাছে জামাইকা কুইন্স অঞ্চলে। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে ট্রাম্প চতুর্থ।
ট্রাম্প ছোটবেলায় পড়াশোনার চেয়ে বেশি পটু ছিলেন দূরন্তপনায়। তার দুষ্টুমি ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণ সামাল দিতে না পেরে ১৩ বছর বয়সে নিউইয়র্ক সামরিক একাডেমিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। হাইস্কুল জীবন এই সামরিক একাডেমিতেই শেষ করেন ট্রাম্প। এই একাডেমি তাকে অন্য ছেলেদের চেয়ে বেশি সামরিক প্রশিক্ষণ শিখিয়েছিল।
১৯৬৮ সালে ট্রাম্প পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি নেন। তারপর বাবার প্রতিষ্ঠানে খুব ছোট পদের কাজ দিয়ে শুরু হয় তার কর্মজীবন।
এরপর বাবার কাছ থেকে ১০ লাখ ডলার ঋণ নিয়ে নিজেই সম্পত্তি ব্যবসা শুরু করেন। যেখানে তার সফলতাও আসে। পরে অবশ্য বাবার সঙ্গেই ব্যবসায় যোগ দেন। ১৯৭১ সালে ট্রাম্প তার বাবার প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ করেন। প্রতিষ্ঠানটির আগের নাম পরিবর্তন করে ‘দ্য ট্রাম্প অর্গানাইজেশন' রাখেন তিনি।
দিন দিন ব্যবসার প্রসার ঘটাতে থাকেন। বলা হয়ে থাকে তিনি ব্যবসায়ী হিসেবে সফল। তবে তিনি যে লোকসানের মুখ দেখেননি, তা কিন্তু নয়। এরপরও থেমে থাকেননি ট্রাম্প, এগিয়ে গেছেন।
নিজের নাম দিয়ে বহু বিখ্যাত ভবন তিনি গড়েছেন। ট্রাম্প প্লেস, ট্রাম্প ওয়ার্ল্ড টাওয়ার। ট্রাম্প ইন্টারন্যাশানাল হোটেল অ্যান্ড টাওয়ার এর মধ্যে অতি পরিচিত একটি ভবন। এমনকি মুম্বাই, ইস্তানবুল এবং ফিলিপিন্সেও তিনি তৈরি করেছেন ট্রাম্প টাওয়ার।
বিনোদন জগতেও হাত লাগিয়েছেন ট্রাম্প। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৫ পর্যন্ত মিস ইউনিভার্স, মিস ইউএসএসহ বিভিন্ন সুন্দরী প্রতিযোগিতার মালিক ছিলেন তিনি। ২০০৪ সালে এনবিসি টেলিভিশনে তিনি একটি রিয়্যালিটি শো চালু করেন। টানা ১৪টি সিজন ওই শোর উপস্থাপনা করেন ট্রাম্প।
ডোনাল্ড ট্রাম্প একই সাথে যুক্তরাষ্ট্রের একজন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী, বিশিষ্ট সামাজিক ব্যক্তিত্ব ও সাহিত্যিকও বটে।
ব্যবসায় ভর করেই চলছিল ট্রাম্প। মাত্র ১৭ মাস আগে তিনি রাজনীতিতে আসেন। ১৬ প্রার্থীকে পরাজিত করে রিপাবলিকান পার্টির পক্ষ তিনি প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন চূড়ান্ত করেন। বেশির ভাগ জনমত জরিপ বলছিল তিনি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না।
কিন্তু এই জরিপ, গবেষণা, আলোচনা-সমালোচনাকে বৃদ্ধাআঙ্গুল দেখিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হলেন ৭০ বছর বয়সী ডোনাল্ড জে. ট্রাম্প।