‘জাগো বাহে কোনঠে সবায়’

নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে সৈয়দ শামসুল হক কবিতায় লিখেছিলেন,

‘আমি জন্মেছি বাংলায়

আমি বাংলায় কথা বলি

আমি বাংলার আলপথ দিয়ে, হাজার বছর চলি।

চলি পলিমাটি কোমলে আমার চলার চিহ্ন ফেলে।

তেরশত নদী শুধায় আমাকে কোথা থেকে তুমি এলে?’

এই কবি মঙ্গলবার বিকালে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। প্রথম সারির গুরুত্বপূর্ণ এই লেখককে হারিয়ে জাতি শোকতপ্ত।

শামসুল হকের জীবনী খুঁজলে দেখা মেলে তার বিশাল সাফল্যসম্ভার। ২৯ বছর বয়সেই বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান তিনি। এখন পর্যন্ত তিনিই সর্বকনিষ্ঠ কথাসাহিত্যিক হিসেবে এই পদক অর্জন করেছেন।

বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য সৈয়দ হক জীবদ্দশাতেই অনেক সম্মাননা পেয়েছেন। তার অন্যান্য পদক তালিকায় রয়েছে, আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, অলক্ত স্বর্ণপদক, আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, কবিতালাপ পুরস্কার, লেখিকা সংঘ সাহিত্য পদক, একুশে পদক, জেবুন্নেসা-মাহবুবউল্লাহ স্বর্ণপদক, পদাবলী কবিতা পুরস্কার, নাসিরুদ্দীন স্বর্ণপদক, টেনাশিনাস পদক,
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ আরও অনেক।

কবিতা, উপন্যাস, নাটক, ছোটগল্পসহ সাহিত্যের সকল শাখায় সাবলীল পদচারণার জন্য তাকে 'সব্যসাচী লেখক' বলা হয়। তার সাহিত্যকীর্তি ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ ও ‘নূরলদীনের সারাজীবন’ তাকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছে।

কয়েকমাস আগে লন্ডনে এক আড্ডার  সময় প্রসঙ্গক্রমে আবদুল গাফফার চৌধুরী বলেছিলেন, ‘বয়স তো অনেক হয়েছে আমাদের। হয়তো এটাই আমাদের জীবনের শেষ দেখা। আবার দেখা হতেও পারে।’

কিন্তু আর দেখা হলো না, সে দেখাই হয়ে থাকলো শেষ দেখা।

কবির এই তিরোধান বাংলা সাহিত্যে এক অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি করলো।  তার কিছু নাটক অসমাপ্ত রেখেই তিনি চলে গেলেন।

যেখানেই থাকুন কবি, ভালো থাকুন। ভক্তদের ভালোবাসা আপনার সাথেই থাকবে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com