শুধু না জানার কারণে সামান্য অসুখেই বাবা-মা কিংবা অভিভাবকদের ছুটতে হচ্ছে সরকারি বড় হাসপাতালে নয়ত বেসরকারি ক্লিনিকে। এতে একদিকে যেমন ভোগান্তি পোহতে হচ্ছে তেমনি অপচয় হচ্ছে অর্থেরও।
বগুড়া জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইউনিসেফের (জাতিসংঘ শিশু তহবিল) আর্থিক সহায়তায় ১৯৬০ সালে বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকায় ‘স্কুল হেলথ ক্লিনিক’ নামে ওই প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ করা হয়।
সরকারি অথবা বেসরকারি যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঁচ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্যই ক্লিনিকটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।
শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার জন্য সরকারি ক্লিনিকে বর্তমানে মেডিকেল অফিসার হিসেবে দুই জন চিকিৎসক, দুই জন সহকারী নার্স, এক জন ফার্মাসিস্ট ও এক জন এমএলএসএস অর্থাৎ পিওন কাজ করছেন।
ক্লিনিকটি শুক্রবার বাদে সপ্তাহে ছয় দিন সকাল সাড়ে ৮টা থেক দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত খোলা থাকে। সর্দি, জ্বর, মাথা ব্যথাসহ প্রাথমিক চিকিৎসায় সেখান থেকে বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া হয়।
ক্লিনিকটিতে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় ৫৫ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত ওই ক্লিনিকটিতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, নার্স ও পর্যাপ্ত ওষুধ থাকলেও অভাব শুধু রোগীর।
১৭ ডিসেম্বর ওই ক্লিনিকে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত ৬ ঘন্টায় চিকিৎসা নিতে এসেছিল মাত্র ১২জন শিক্ষার্থী।
ওই ক্লিনিক থেকে মাত্র ২০০ গজ দূরে অবস্থিত বগুড়া ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।
বিদ্যালয়টির দশম শ্রেণির ছাত্রী জেবা তাবাসসুম তামান্না বলে, সে ওই ক্লিনিক সম্পর্কে কিছুই জানে না।
"এমন ক্লিনিকের কথা আমি হ্যালোর কাছেই প্রথম শুনলাম। আগে জানলে তো বাবা মাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানেই চিকিৎসা নিতে পারতাম।"
বগুড়ার বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র রিফাত শাহরিয়ার রাতুলও জানে না স্কুল হেলথ ক্লিনিকের কথা।
সে হ্যালোকে বলে, কয়েক মাস আগে প্রচণ্ড জ্বর হয়েছিল ওর। আমার বাবা-মাকে অনেক টাকা খরচ করতে হয়েছে।
"আগে জানলে বাবা মাকে সঙ্গে নিয়ে ওই ক্লিনিকেই যেতাম।"
বগুড়া স্কুল হেলথ ক্লিনিক এর মেডিকেল অফিসার ড. আফিফা হোসেন হ্যালোকে বলেন, "আমরা প্রতিদিন সকাল সাড়ে আটটা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বসে থাকি।
"যখন কোনো শিক্ষার্থী আসে আমরা তাকে বিনামূল্যে সেবা দেই। তবে এই স্কুল হেলথ ক্লিনিকটির সম্পর্কে অনেকেই জানে না।"
এই কারণে এই ক্লিনিকে রোগীর উপস্থিতি অনেক কম বলে জানান তিনি।