পিরোজপুর পৌরসভার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে অভিভাবকদের কথার সত্যতা পাওয়া যায়। টিফিন শুরু বা স্কুল ছুটি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুরা ভিড় করে এসব খাবারের দোকানে। খাবারের মধ্যে রয়েছে ফুচকা, চটপটি, আচার, চানাচুর, ঝালমুড়ি, ট্যাং এর শরবত ও আইসক্রিম।
খুব কম দামে বিক্রি হওয়ায় শিশুরা সহজেই কিনতে পারে এসব খাবার। ফুচকা-চটপটির প্রতি প্লেটের দাম আট-১০ টাকা, আইসক্রিম পাঁচ টাকা, ট্যাং প্রতি গ্লাস তিন টাকা আর চানাচুর, মুড়ি ও আচার বিক্রি হয় পাঁচ থেকে দশ টাকায়।
হুমায়ুন কবির খান নামের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, এই অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে শিশুরা অসুস্থ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, তার মেয়েকে বাড়ি থেকে টিফিন দিলেও সেটা খেতে চায় না।
"শিশুরা শিক্ষকদের সামনেই এসব অস্বাস্থ্যকর খাবার খাচ্ছে। কিন্তু তারা কোনো পদক্ষেপ নেন না।"
এস এম পারভেজ নামের আরেক জন অভিভাবক জানান, স্কুলের সামনে খোলা খাবার বিক্রি বন্ধ করলে এই সমস্যা কিছুটা হলেও কমবে।
এটা বন্ধ করতে স্কুলকেই পদক্ষেপ নিতে হবে, বলেন তিনি।
"এছাড়া শিশুকে স্কুলে পাঠানোর পর তার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষকেরই।"
অস্বাস্থ্যকর খাবার নিয়ে কয়েক জন শিশুর সঙ্গে কথা হয় হ্যালোর।
পিরোজপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র তাওসীফ খান বলে, এসব খাবার খেতে খুব মজা, আর বন্ধুদের আড্ডায় পড়লে খেতে হয়।
পিরোজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া মোহনা আজমীন বলে, জানি এসব খাবার অস্বাস্থ্যকর। কিন্তু ছুটির পর সবাই খায়। তাই খাই।
একই স্কুলের ঐশী দাস জানায়, অনেক সময় বাসা থেকে খাবার আনতে ইচ্ছে করে না। তখন এসব খাবার খাই।
কথা হয় কয়েকজন খাবার বিক্রেতার সঙ্গে। তারা জানায়, হাতে তৈরি এসব খাবার তারা পরিষ্কার পরিবেশেই বানায়। এসব খাবারের ক্রেতা বেশিরভাগই স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা।
সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শম্পা রাণী রায় বলেন, "আমরা বিষয়টি লক্ষ্য করেছি। কিন্তু ছাত্রদের বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও ওরা কথা মানছে না।"
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ননী গোপাল রায় বলেন, "স্বাস্থ্যসম্মত নয় এমন খাবার খেলে পেটের ব্যথা, পেট ফাঁপা, বমি ও অপুষ্টিসহ বিভিন্ন রকম রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।"