চুয়াডাঙ্গা জেলার এই কন্যা উত্তর বলেছে আর শ্রুতিলেখক শুনে শুনে লিখেছে সে উত্তর। এত কষ্ট করেও সে পেয়েছে জিপিএ ৪ দশমিক ২৮।
সদর উপজেলার হাজরাহাটি তালতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগে পড়েছে নুসরাত। আলোকদিয়া ইউনিয়নের দৌলতদিয়ার এলাকায় থাকে ও।
বাবা-মার একমাত্র সন্তান নুসরাত শিশুকাল থেকেই হাঁটা-চলা করতে পারে না। ওর ডান হাতটিও অকেজো।
তার এই শারীরিক অবস্থার কারণে যশোর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শ্রুতিলেখক নেওয়ার অনুমতি দেন। শ্রুতিলেখক হিসেবে উত্তপত্রে লিখে দেয় তারই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রিতু খাতুন।
নুসরাত জানায়, পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। বাসা থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে। এই রাস্তা তাকে হুইলচেয়ারে করেই পাড়ি দিতে হয়েছে।
আর দোতালায় তার পরীক্ষার কক্ষে গেছে মায়ের কোলে করে।
ও আরও জানায়, ২০১২ সালে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় জিপিএ ৩ দশমিক ২৯ পায় সে।
সন্তানের এই সাফল্যে বাবা-মা দুজনেই খুব খুশি।
নুসরাতের মা খালেদা ইসলাম বলেন, “মস্তিষ্কে সমস্যাজনিত রোগের কারণে শিশুকাল থেকেই নুসরাতের দুই পা ও ডান হাত অকেজো।
“তাকে প্রথমে দৌলাতদিয়াড় ব্র্যাক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করাই। পরে বাড়ি থেকে চার কিলোমিটার দূরের চুয়াডাঙ্গা শহরের ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি করি।”
নুসরাতের বাবা সাইফুল ইসলাম বলেন, “প্রথম শ্রেণি থেকেই নুসরাত পড়াশোনায় বেশ ভালো। এই শারীরিক সমস্যা নিয়েও কোনো দিন সে কোনো পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়নি।”
“ভাল ছাত্রী হিসেবে স্কুলে তার সুনামও রয়েছে”, বলেন তার মাদ্রাসা শিক্ষক বাবা।
কিন্তু বাসা থেকে চুয়াডাঙ্গার সব কলেজের দূরত্ব কমপক্ষে ৭-৮ কিলোমিটার। তাই তার কলেজে যাতায়াত নিয়ে চিন্তিত তার বাবা–মা।