পাহাড়ধসের শঙ্কায় পুনর্বাসন ছাড়াই উচ্ছেদ

বর্ষা শুরু হতেই ধসের আশঙ্কায় চট্টগ্রামে ফের পাহাড়ি এলাকা থেকে অবৈধ বসতি উচ্ছেদ শুরু হয়েছে। তবে উচ্ছেদ হওয়া বস্তিবাসীদের পুনর্বাসনের কোন ব্যবস্থা এখনও চোখে পড়েনি।

এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার ৪০টি বস্তি তুলে দেওয়া হয়। এর আগে গত রোববারও ১৮টি বস্তি উচ্ছেদের খবর পাওয়া যায়। মোট ২৫টি পাহাড়ে বস্তি উচ্ছেদ করা হয়েছে।  

মতিঝর্ণা পাহাড় থেকে উচ্ছেদ হওয়া বসবাসকারীরা তাদের পুনর্বাসনে কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন।

বুধবার উচ্ছেদ করা ওই বসতি ঘুরে দেখা যায়, বসবাসকারীরা সবাই খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছে।

৫-নং গলির এক বাসিন্দা জানান, আগাম না জানিয়েই তাদের বাড়িঘর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা কোথায় থাকবে তার ব্যবস্থা করে দেয়নি। এতে বিশেষ করে শিশু  ও বৃদ্ধরা কষ্টের মুখে পড়েছে।

শিখা চৌধুরী দাবি করেন, মতিঝর্ণার ৫-নং গলিতে তার স্থাপিত বসতিটি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত ছিল না।তারপরও পানি ও গ্যাসের লাইন কেটে দিয়ে তার বসতিটি উচ্ছেদ করায় আপেক্ষ করেন তিনি।

তিনি বলেন,"তারা মানুষজনকে মারধরও করেছে।"

বাড়ি সমতলে থাকার পরও উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ওই এলাকার অন্য এক বাসিন্দা আনোয়ারা বেগম।

তিনি বলেন, "আমার দুই বছরের মেয়ে সাদিয়াকে খাট থেকে ফেলে দেয়।"

রোববার তার ঘর এবং জিনিসপত্র ভেঙে ফেলার সময় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান তিনি।

কথা হয় বসতির শিক্ষার্থী আয়েশা, মাহী, মিনহাজের সঙ্গে।

তারা জানায়, তাদের থাকার জায়গা নেই, ঠিকমতো খেতেও পাচ্ছে না। স্কুলেও যেতে পারে না ওরা।

রোববার থেকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নগরীর পাহাড়গুলো থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি উচ্ছেদ শুরু করা হয়।

জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভূমি, সদর সার্কেল) সাইফুল ইসলাম জানান, স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি পানি-বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজও চলছে।

প্রশাসনের মতে, পাহাড়ে অধিক ঝুঁকিপূর্ণদের উচ্ছেদের পাশাপাশি তাদের পুনর্বাসনের দিকটিও ভাবা হচ্ছে।এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় তারা যাতে পুনরায় বসতি গড়তে না পারে সেদিকেও নজরদারি রাখা হবে।

প্রতি বছর পাহাড় ধসের মত দুর্যোগে মারা যায় অনেক মানুষ। কিন্তু থেমে নেই এসব জায়গায় ঘরবাড়ি তৈরি ও বসতি স্থাপন। ফলে গত কয়েক বছর ধরে সরকার বর্ষাকালে উচ্ছেদ করে এসব অবৈধ ঘরবাড়ি।   

Related Stories

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com