ছাত্রের মাথা ফাটালেন শিক্ষক

চুয়াডাঙ্গা জেলায় শ্রেণিকক্ষে ‘হাতের লেখা জমা দিতে না পারায়’ শিক্ষার্থীর মাথা ফাটিয়েছেন একটি কিন্ডার গার্টেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক।

শনিবার সদর উপজেলার দৌলাতদিয়াড় গ্রামের অক্সফোর্ড মডেল স্কুলে এই ঘটনা ঘটে।

আহত সাকিবুল হাসান (৯) ওই স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র এবং উপজেলার আলোকদিয়া ইউনিয়নের হাতিকাটা গ্রামের আসলাম উদ্দিনের ছেলে।

সাকিবুলের পরিবার জানায়, ক্লাসে হাতের লেখা জমা দিতে না পারায় বেঞ্চের সঙ্গে তার মাথা ঠুকে পরে দেয়ালে ধাক্কা মারেন প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম জান্টু।

এছাড়া সাকিবুলের মাথায় স্কেল দিয়েও আঘাত করেন বলেও তাদের অভিযোগ।

ঘটনা জানাজানি হলে ওর দাদা আলতাফ মন্ডল স্কুলে গিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

সাকিবুলের বাবা বলেন,“মাথা ফেটে রক্ত বের হলে প্রধান শিক্ষক তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান এবং মাথায় ব্যান্ডেজ করিয়ে আনেন।”

এতে ওর মাথায় চারটি সেলাই দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ তার।

এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় স্কুলের প্রধান শিক্ষককে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সদর থানার এসআই শরিফুল ইসলাম।

তবে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম জান্টু বলেন, “স্কুলের সব ছাত্রকে প্যারাগ্রাফ লিখতে দেওয়া হয়েছিল। সাকিবুল লেখেনি।

“তাই তাকে ক্লাসের বাইরে কান ধরে দাঁড়াতে বলা হয়েছিল। তারপরও সে শ্রেণিকক্ষে বসে থাকায় হাত ধরে টেনে বের করতে গেলে তার পাশের ছেলের হাতে থাকা স্কেলে তার কপাল কেটে যায়।”

২০১০ সালের ৯ অগস্ট দেশের সরকারি-বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শারীরিক শাস্তি দেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে এক পরিপত্র জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব সৈয়দ আতাউর রহমান স্বাক্ষরিত এ পরিপত্রে শিক্ষার্থীদের শারীরিক শাস্তি দেওয়াকে অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে, ২০০৮ সালের এপ্রিল মাসে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য এক পরিপত্র জারি করে। এ ব্যাপারে হাইকোর্টেরও অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ রয়েছে।

পরিপত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শারীরিক শাস্তি দেওয়া বন্ধ করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

যারা শারীরিক শাস্তি দেবেন তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ১৮৬০, ১৯৭৪ সালের শিশু আইন এবং ক্ষেত্রমতে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগ গ্রহণেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com