প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার কারণে চাষিরা ২৯ মে'র আগে বাগান থেকে আম সংগ্রহ করতে পারেননি।
এরপর অল্প সময়ের মধ্যে একসঙ্গে অধিকাংশ আম পেকে যাওয়ায় বাজারজাত করার পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যাচ্ছে না।
তাই দূরদূরান্তের জেলাগুলোতে নিয়ে বিক্রি করার আগে আম নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন পাইকাররা। এজন্য কিনতে উৎসাহী না হওয়ায় প্রচুর আম অবিক্রিত রয়ে যাচ্ছে এবং এ কারণে দাম পড়ে যাচ্ছে বলে ধারণা অনেক ব্যবসায়ীর।
বাজার ঘুরে জানা যায়, বিভিন্ন জাতের আমে মণ প্রতি চার থেকে ছয়শত টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে।
রাজশাহীর সাহেববাজার এলাকার আড়তদার শহিদুল (৪৮) জানান, গত বছর ১৮০০-২০০০ টাকা মণে ক্ষিরসাপাতি আম বিক্রি হলেও এবার তা ১২০০-১৪০০ টাকা মণে বিক্রি করতে হচ্ছে।
বাজারে প্রচুর আম থাকলেও ক্রেতা তেমন নেই বলে আক্ষেপ করেন অনেক ব্যবসায়ী।
রায়পাড়া আম বাগানের ইজারাদার হাসান (৪৬) জানান, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও অন্যান্য জায়গা থেকে গত বছরগুলোতে পাইকার আসলেও এবার তাদের দেখা নেই।
কারণ জানালেন আম ব্যবসায়ী মঞ্জুর রহমান মঞ্জু। তিনি বলেন, গত বছরগুলোতে আম কিনে নিয়ে যাওয়ার সময় তাতে ‘ফর্মালিন মেশাত’ অনেক ব্যবসায়ী।
কিন্তু এবার প্রশাসনের কড়া নজরদারি থাকায় ফর্মালিন মেশানো যাচ্ছে না বলে তিনি জানান।
ইজারাদার হাসান জানান, গত বছর ঢাকা ও চট্টগ্রামে আম নিয়ে যাওয়ার সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত ফর্মালিন পরীক্ষা করে প্রচুর আম রাস্তায় নষ্ট করে ফেলে।
"এবারও ব্যবসায়ীরা পুলিশি অভিযানের ভয়ে আম কিনতে আসছেন না।"
এছাড়া ভারত থেকে প্রচুর আম আরও কম দামে আমদানি করায় রাজশাহীর আমের চাহিদা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন অনেক ব্যবসায়ী।
জেলা প্রশাসক মেজবাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমের সুনাম রক্ষা করার জন্যই এটা করা হয়েছে।
"আর চাষিদের তো আম পাঠাতে না করা হয়নি। বলা হয়েছে অপরিপক্ক আম যেন না পাঠায়।
"এছাড়া আম সংরক্ষণের জন্য কী করা যায় তা নিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অফিসারের সঙ্গে কথা হয়েছে। এটা প্রক্রিয়াধীন আছে।"
আমের গুণগত মান রক্ষা করতে এবার প্রথম থেকেই সজাগ ছিল রাজশাহী প্রশাসন। অপরিপক্ক আম যাতে ওষুধ দিয়ে পাকিয়ে বাজারে ছাড়া না হয় সেজন্য আম পাড়ার একটি সময়সূচি বেঁধে দেওয়া হয়েছিল প্রশাসনের পক্ষ থেকে।