চরের খাসজমিতে আবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করেন সেখানকার মানুষ। তবে চরবাসীর অন্যান্য সংকটের চেয়ে শিক্ষা সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
চরের বাসিন্দা শামছুদ্দিন জানান, তার চার সন্তানকে তিনি পড়ালেখা করাতে চান। তার বড় ছেলে পাশের চরে গিয়ে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছে। কিন্তু দূরত্বের জন্য তাকে পড়া ছাড়তে হয়েছে।
মাইনুদ্দিন মাঝি নামের একজন বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় ছেলেমেয়েরা নদীতে মাছ ধরে। মহিষের বাথানে রাখালের কাজ করে।
শিশু হাসানের স্বপ্ন বড় হয়ে র্যাবে চাকরি করবে। জলদস্যুদের হাত থেকে চরবাসীকে রক্ষা করবে। হাসানের মত অনেক শিশুই আছে এখানে যারা চোখে ডাক্তার- ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ক্ষেতে কাজ করে, মাছ ধরে।
স্থানীয় বাসিন্দা মেজবাউদ্দিন জানান, শহরের এক জায়গার মধ্যে কয়েকটা স্কুল থাকে। কিন্তু আমাদের ঢালচরে একটা বিদ্যালয়ও নেই।
ঢালচরের মালিক কামাল উদ্দিন চৌধুরী জানান, এই চরের শিশুদের কথা চিন্তা করে স্কুলের জন্য আমি জায়গা দিয়েছি। একটি ঘরও তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসন ও নেতৃবৃন্দ ঢালচরের নাম কেটে স্কুলটি অন্য চরে নিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সায়েদুজ্জামান জানান, প্রাথমিক শিক্ষাকে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে ১৫ শ প্রাথমিক বিদ্যালয় তৈরি করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে যে গ্রামগুলোতে লোকবসতি বেশি, কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই সেখানে পর্যায়ক্রমে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই ঢালচর ১৯৫৬ সালে সরকারের কাছ থেকে অধিগ্রহণ করলেও মূলত এখানে বসবাস শুরু হয় ২০০০ সাল থেকে। পর্যায়ক্রমে চরে নদী ভাঙনের শিকার হয়ে আশ্রয়হীন মানুষ এখানে বসতি গড়ে। এ চরের মোট জনসংখ্যা তিন হাজার যার মধ্যে ছয় শতাধিক শিশু রয়েছে।