গ্লোবাল পুরস্কার জিতল কেশব

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা প্লান ইন্টারন্যাশনালের ২০১৪ সালের গ্লোবাল পুরস্কার পেয়েছে নীলফামারী জেলার কেশব রায়।

শনিবার প্লান ইন্টারন্যাশনালের জার্মান অফিস থেকে এক বার্তায় কেশবের এ পুরস্কারের  ঘোষণা দেওয়া হয়।

 সে এ জেলার জলঢাকা উপজেলার বিন্ন্যাকুড়ি গ্রামের শিশু অধিকার কর্মী হিসাবে ভলান্টিয়ার ক্যাটাগরিতে সেরা নির্বাচিত হয়।

নিজ এলাকায় বাল্যবিয়ে বন্ধে সচেতনা সৃষ্টি এবং ঝরে পড়া শিশুদের স্কুলমুখী করাসহ নানা উন্নয়নমূলক কাজে  বিশেষ অবদান রাখায় তাকে এ পুরস্কার দেয়া হয়।

তার পুরস্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জলঢাকায় অবস্থিত প্লান বাংলাদেশের প্রধান ড. ঋষিকেশ সরকার।

প্লান বাংলাদেশের সহযোগিতায় শিশু সংগঠক কেশব ২০১২ সালে শ্রীলংকায় শিশু সমাবেশে ও ২০১৩ সালে ব্যাংককে শিশু সুরক্ষা  প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছে। সে জাতিসংঘের ইয়ুথ কারেজ অ্যাওয়ার্ড ফর এডুকেশন ২০১৩ অর্জন করেছিল।

৭০ টি দেশের মধ্যে সেরা নির্বাচিত হওয়ায় কেশব বলে, “এ পুরস্কার পেয়ে আমি খুব আনন্দিত। এলাকার উন্নয়নে আরো অনেক কিছু করতে চাই।” 

নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার কৈমারী এলাকার দিনমজুর অজিত চন্দ্র বর্মন, গৃহিনী রঞ্জিতা রায়ের ছেলে কেশব চন্দ্র রায় নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও লেখাপড়ার পাশাপাশি নিজেকে সমাজসেবামূলক কাজে নিজেকে গড়ে তোলে।  

কেশব জানায় সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার সময় তার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায় পারিবারিক অভাব-অনটনের কারণে। কাজ শুরু করে স্কুলের পাশে বিন্নাকুড়ি বাজারে ভাঙাড়ির দোকানে। সে সময় বাড়ির পাশে বসত সূর্যমুখী শিশু সংগঠনের সভা (বর্তমানে সূর্য উদয়)। সে সংগঠনের সভাপতি ছিলেন প্রতিবেশী বড় ভাই কাঞ্চন রায়। তিনি তাকে আবার স্কুলে ভর্তি হতে উৎসাহিত করেন।এক বছরের অর্জিত আয়ের কিছু অংশ জমিয়ে বিন্নাকুড়ি বিসি সরকার দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে আবার ভর্তি। সেই থেকে লেখাপড়া  চলছে। এবার কেশব জলঢাকা বিএম কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেবে।

কেশব বলে, "কাঞ্চন দাদার মাধ্যমে ওই শিশুদলের সক্রিয় সদস্য হই। এখন আমি জলঢাকা উপজেলা শিশু ফোরামের সভাপতি ও জাতীয় শিশু টাস্কফোর্সের সদস্য।" 

কেশব অরো জানায় ২০২৩ সালের ১২ জুলাই জাতিসংঘের শিক্ষাবিষয়ক বিশেষ দূত ও ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউনের হাত থেকে তার পক্ষে পুরস্কারটি গ্রহণ করেন শিশু উন্নয়নবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা প্লান ইন্টারন্যাশনালের আমেরিকা প্রতিনিধি।

শিশুবিবাহ বন্ধে সচেতনতা সৃষ্টি এবং ঝরেপড়া শিশুদের বিদ্যালয়মুখী করার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় তাকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এ পুরস্কার পাওয়ায় গর্ডন ব্রাউনের দেওয়া অভিনন্দনপত্রে বিশ্বের যুবসমাজের নেতা ও রোল মডেল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল কেশবকে।

 কেশব বলে, “বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ার কষ্টটা আমি বুঝি। তাই আমি শিশুদলের সদস্যদের নিয়ে এলাকায় শিশু অধিকার, বাল্যবিবাহ, ঝরেপড়া শিশুদের স্কুলে ফেরানো, স্যানিটেশন, যৌতুকসহ নানা বিষয়ে গণসচেতনতা সৃষ্টিতে নাটক, শোভাযাত্রা ইত্যাদিতে সক্রিয় অংশ নেই।

“শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমি সারা জীবন কাজ করতে চাই”। 

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com