ময়মনসিংহের এই অনাথ আশ্রমে ১১ বছর ধরে বাস করছে সোনিয়া। সে এখন একাদশ শ্রেণিতে পড়ে।
জীবনে অনেক কিছু হারালেও পাটগুদাম এলাকার এই এতিমখানা ওকে অনেক কিছু দিয়েছে।
এখানে থেকেই তার উপলব্ধি হয়েছে মানুষের সেবা করার। তাই সে নার্স হতে চায়।
ওখানে থাকে ছোট্ট মেয়ে সোমাইয়া। ও পড়ছে নার্সারিতে। তার ইচ্ছে শিক্ষকতা করার।
এখানকার বাসিন্দা সাত বছর বয়সী লাকি বলল, এতিমখানার হুজুর তাকে বাবার মতোই আদর করে।
তবুও তার মন ভরে না। কাউকেই বাবা বলে ভাবতে পারে না। বড় হয়ে শিক্ষক হবার স্বপ্ন দেখে সে।
মুক্তার বয়স সাত বছর। ওর বাবা মারা গেছে। তারা খুব গরিব তাই মা তাকে এতিমখানায় রেখে গেছে।
ও বলল, তার মার কথা খুব মনে পড়ে। যদিও ওর মা সপ্তাহে সপ্তাহে এসে দেখা করে যায়।
এরপর ওর মা তাকে এই এতিম খানায় নিয়ে আসে। এর কিছুদিন পর মাকেও হারায় সে।
নানাজনের দানে চলা বেসরকারি এই এতিমখানায় আছে ৪৯টি শিশু। ওদের বয়স ৭ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। ১৯৬৮ সালে ২৭ শতাংশ জায়গার ওপর এটি শামসুন নাহার নামে একজন প্রতিষ্ঠা করেন। এখন ২১জন সদস্য পরিচালনা করছেন। পদাধিকার বলে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকও যুক্ত এর সাথে।
দেশের ও প্রবাসের বাংলাদেশিদের দানে চলা এই এতিমখানার শিশুদের নার্সারি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়।
দুজন করে অফিস সহকারী ও মেট্রন আছেন। বাংলা, আরবি ও সেলাই শিক্ষকসহ আটজন শিক্ষক আছেন।
মেট্রন মমতাজ বেগম জানান, শিশুরা বছরে একবার বনভোজনে যায়। দুই ঈদেই নতুন কাপড় পায় তারা।
১৮ বছর ধরে এটি দেখাশোনা করছেন এতিমখানার তত্ত্বাবধায়ক মো. আব্দুল কুদ্দুস।
তিনি বলেন,"এখানে শিশুদের পরম মমতায় বড় করে তোলা হয়।
“এখানকার শিশুরা যেন প্রতিষ্ঠিত হতে পারে সেজন্যে দরকারি প্রশিক্ষণও দেয়া হয় এখানে।"
প্রতিষ্ঠানটি চালাতে মাসে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়।