পূজার প্রতিমা গড়তে হাত লাগিয়েছে শিশুরাও

টাঙ্গাইলের শারদীয় দুর্গাপূজার প্রতিমা তৈরিতে মির্জাপুরের জামুর্কী নাটমন্দিরে কয়েকজন শিশুও হাত লাগিয়েছে। 
পূজার প্রতিমা গড়তে হাত লাগিয়েছে শিশুরাও

অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া পিন্টু পাল বলে, 'প্রতিমা তৈরির কাজ করতে ভালই লাগে। নিজের হাতে  প্রতিমা বানাই, আমার কাছে এটা অনেক বড় পাওয়া। তবে এখনও পুরোপুরি পারি না। শিখছি মাত্র।’

দশম শ্রেণির প্রসেঞ্জিৎ পাল বলেন, ‘আমি সারা বছরই ঠাকুর বানাই। একাজ থেকে যা পাই, সেটা দিয়ে সংসারে কিছু দেই এবং আমার লেখাপড়া চালাই।

সব কাজেই কষ্ট আছে তবে এ কাজ করতে করতে একাজের প্রতি একটা ভাললাগা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানায়, প্রসেঞ্জিত।  

প্রতিমার ওস্তাদ কারিগর উপেন পাল বলেন, ‘আমাদের তো অনেক বয়স হয়েছে, একালের পোলাপাইনরে  যদি না শিখাই তাহলে আমাদের পরে ঠাকুর বানাবে কে?’

তাই ওদের পাশে থেকে উৎসাহ দেন আর ভুলগুলো শুধরে দিয়ে কাজ শেখান বলে তিনি জানান।

একাদশ শ্রেণির বিশ্বজিৎ পাল বলেন, ‘আমাদের বাপ-দাদারা সবাই ঠাকুর বানান। ছোটোবেলা থেকেই মাটির জিনিস বানাই। পরিবারের বড়দের কাছে থেকেই কাজ শিখেছি। তাই পড়ালেখার ফাঁকে একাজ করি।’

ভালো লাগে বলেই বিশ্বজিৎ প্রতিমা বানায়। এ কাজ সবাই পারে না আর যখন কেউ কাজ দেখে প্রশংসা করে তখন তার অনেক ভালো লাগে।

প্রসেঞ্জিতের বাবা বলেন, ‘আমার পোলাডা অনেক সুন্দর করে ঠাকুর বানায়। অনেক তাড়াতাড়ি ঠাকুর বানানো শেখছে। ওদের দেখলে মনের ভেতর শান্তি লাগে। আশীর্বাদ করি, ও একদিন অনেক বড় কারিগর হবে।’  

নবম শ্রেণির অজয় পাল বলেন, ‘ক্রেতারা মোবাইলে ছবি দেন আর সেই ছবি দেখে, তাদের পছন্দসই ঠাকুর বানিয়ে দেই।’  

জামুর্কী নাটমন্দির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র পাল বলেন, ‘শিশুরা দুর্গা ঠাকুর, স্বরসতী দেবীসহ অনেক ঠাকুর বানাতে পারে। এটা ভালো দিক।  

‘এতে এদের সৃজনশীলতা যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনি মৃৎশিল্পের ধারাকে এরাই ধরে রাখতে পারবে। আমরা বড়রা সব সময় শিশুদের কাজ শেখানোর চেষ্টা করি যাতে আরও ভালো ঠাকুর বানাতে পারে।

এবারের দুর্গাপূজাতে অনেক কাজের অর্ডার পেয়েছেন আর তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন বলে জানান নারায়ণ চন্দ্র।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com