সুফল মিলছে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে

বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হওয়ায় সুফল মিলছে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায়।
সুফল মিলছে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে

গত আট বছর ধরে এই টুর্নামেন্ট সরকারিভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার ফলে পীরগঞ্জ উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতির হার বৃদ্ধি পেয়েছে বলে বিদ্যালয় সূত্রে জানা গীছে।

শিক্ষার্থীরা নিয়মিত স্কুলে এসে পড়ালেখার পাশাপাশি ফুটবল খেলা অনুশীলন করছে।

সম্প্রতি পীরগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হয় হ্যালোর।

চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র রায়হান হোসেন বলে, “সারা বছরই পড়ালেখার পাশাপাশি স্কুলে ফুটবল খেলা অনুশীলন করি। এরপর বছরের মাঝে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলায় অন্যান্য বিদ্যালয়ের সাথে নিজের বিদ্যালয়ের খেলোয়াড় হিসেবে ফুটবল খেলে থাকি।”

 ফুটবল খেলায় অংশ নেওয়ার জন্যই নিয়মিত স্কুলে আসার কথা জানায় সবুজ।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাকিব ইসলাম। ও বলে, “স্কুল যদি নিয়মিত না আসি তখন আমাকে ফুটবল খেলায় নেওয়া হয় না। এজন্য নিয়মিত স্কুলে এসে পড়ালেখার পাশাপাশি ফুটবল খেলি।”

প্রতিদিন ফুটবল অনুশীলন করার কারণে শরীর ও মন ভালো থাকার কথা জানায় খামার সেনুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র আল বরাত। 

ও বলে, ‘স্কুলে টিফিনের সময় খেলে থাকি। আর খেলাধুলা নিয়মিত করার ফলে পড়ায় বেশি মনযোগ আসে।’

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে ছেলেরা এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে মেয়েরা অংশগ্রহণ করে।

এবার পীরগঞ্জ উপজেলা পর্যায়ে বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলায় গোল দিয়ে নিজের স্কুলকে জিতিয়েছে সিঙ্গারোল-এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী রাবেয়া আকতার ও খুশি আকতার।

ওরা জানায়, দুই জনে দুই গোল দিয়ে তাদের স্কুলকে উপজেলা পর্যায়ে বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন করেছে।এখন জেলা পর্যায়ে পীরগঞ্জ উপজেলার হয়ে খেলবে ওদের স্কুল।

রাবেয়া আকতার বলে, ‘প্রথম প্রথম যখন স্কুল মাঠে ফুটবল খেলতাম তখন ভয় হতো, লজ্জা পেতাম। এলাকার মানুষজনও নানা কথা বলতো। যখন ভালো খেলা শুরু করলাম তখন বাবা-মাসহ অনেকেই উৎসাহ দিলেন। ভবিষ্যতে একজন ফুটবলার হতে চাই।’

খুশি আকতার বলে,‘উপজেলা পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি আমরা।এখন জেলা পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিভাগে খেলতে চাই। পীরগঞ্জ উপজেলার হয়ে জাতীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি ছিনিয়ে আনতে চাই।’

সিঙ্গারোল-১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা বীনা রাণী ভক্ত বলেন, ‘মেয়েদের মধ্যে এক ধরনের জড়তা ছিল। ফুটবল খেলায় কয়েকবছর ধরে অংশ নেওয়ার ফলে সেই জড়তা কেটে গেছে। আমার স্কুলের মেয়েরা ভালো ফুটবল খেলছে।

‘ওরা নিয়মিত স্কুলে এসে লেখাপড়ার পাশাপাশি ফুটবল খেলছে। ওদের বাবা-মায়েরাও এখন ফুটবল খেলায় উৎসাহ দিচ্ছেন।’

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট চালু হওয়ার পর থেকে বিদ্যালয়গুলোতে উপস্থিতির হার বেড়েছে। ঝড়ে পড়া ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা কমেছে।’

অভিভাবকদের মধ্যেও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আসছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গ্রামের ছাত্রীরা আগে মাঠে খেলাধুলা করতে গেলে পরিবার থেকে বাধা দেওয়া হতো। মজার বিষয় হলো এখন অভিভাবকরাই তাদের মেয়েদের খেলাধুলায় উৎসাহ দিচ্ছেন।’

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com